ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে: সেনাপ্রধান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে: সেনাপ্রধান

ঢাকা: সিলেটের বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

রোববার (১৯ জুন) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক ও বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছেন। এ সময় তিনি বন্যা কবলিত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন।

সেনা সদস্যদের নিরলসভাবে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রাখা, জরুরি ত্রাণকার্য পরিচালনা, চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মকভাবে আত্মত্যাগের মাধ্যমে সহায়তার নির্দেশনা দেন সেনাপ্রধান।  

উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই মিলে যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করি এই দুর্যোগ মোকাবিলা করতে পারবো। তাই সেনা সদস্যদের সর্বাত্মকভাবে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়েও সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম দেওয়ার আশ্বাসও দেন সেনাবাহিনী প্রধান।  

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন মাস্টার জেনারেল অব অর্ডন্যান্স মো. আবু সাঈদ সিদ্দিক, জিওসি ১৭ পদাতিক ডিভিশন মেজর জেনারেল হামিদুল হক, সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা ও সিলেট জেলার পুলিশ সুপার এবং গণমাধ্যম কর্মীরা।

গত ১৭ জুন থেকে সেনাবাহিনীর সিলেট অঞ্চলের ১৭ পদাতিক ডিভিশন সিলেট জেলার সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জয়িন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারা বাজার, দিরাই ও জামালগঞ্জ উপজেলা এবং কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছে। সেনাবাহিনীর অন্যান্য ফরমেশন থেকে সিলেট এলাকায় উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য বিভিন্ন নৌযান মোতায়েন করা হয়েছে।

এছাড়াও কমান্ডো ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। একই সঙ্গে নৌবাহিনীর একটি দল সিলেট এলাকায় সেনাবাহিনীর সঙ্গে উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করেছে।

নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১৮ জুন ঘাটাইল অঞ্চল থেকে ১৯ পদাতিক ডিভিশন এর ১২৫ জন সেনাসদস্য নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ বিতরণ এবং চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছি।

প্রসঙ্গত, সেনাবাহিনীর সদস্যরা গত ১৮ জুন সুনামগঞ্জ থেকে এমআইএসটির ১৫ জন শিক্ষার্থী এবং ১৯ জুন সুনামগঞ্জের ছাতকে আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২১ জন শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়েছেন। এছাড়াও সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে ২০১০ জন বন্যা দুর্গত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠিয়ে। এছাড়া ৩৬২৫ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া ও ২২০০ জনের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি বন্যার্তদের মধ্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ বিতরণ এবং ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেল গঠন করেছে।

সেনাবাহিনী প্রধানের নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অন্যান্য সব অঞ্চলের ফরমেশনসমূহ নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে এবং অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী প্রধান বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনাও দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।