ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বিবাহিত প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়াই কাল হয় পাখির

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
বিবাহিত প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়াই কাল হয় পাখির

নোয়াখালী: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় ফেরদাউস পাখি নামে এক নারীকে গলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করার চারদিন পর ক্লু লেস এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। বিবাহিত প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়াই কাল হয়েছে পাখির।

রোববার (১৯ জুন) সকালে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চুরি, মোবাইল ফোন ও ওড়না উদ্ধার করে।

এর আগে, শনিবার বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই নারীর প্রেমিক শাহাদাত হোসেন জীবনকে (২৪)।  

জীবন পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ির নির্মাণ শ্রমিক শামছুল আলম দিলসাদের ছেলে। তিনিও পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত জীবন পুলিশকে হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন।  

রোববার দুপুর ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত ২০০৮ সালে ভিকটিম ফেরদাউস পাখির প্রথম বিয়ে হয়। তিন বছর পর স্বামীর সঙ্গে তার ছাড়াছাড়ি হয়। প্রথম স্বামীর সংসারে জান্নাত (৬) নামে একটি মেয়ে আছে তার। পরে ২০১৪ সালে দ্বিতীয় বিয়ে হয় পাখির। ছয় মাস পর সেখানেও বিচ্ছেদ হয়। এরপর চলতি বছরের ২৯ মে জীবনের সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে পরিচয় হয় পাখির। পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। কিছুদিন পর পাখি জানতে পারেন যে জীবন বিবাহিত। এরপর ভিকটিম জীবনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি মেয়েটিকে এড়িয়ে যান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৫ জুন) তারা যোগাযোগ করে পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ি সংলগ্ন সবজি ক্ষেতের দক্ষিণ পাশের নির্জন স্থানে যান। সেখানে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জীবন তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে প্রথমে পাখির গলায় পোচ দেন। পরে গলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেন তিনি। গ্রেফতারকৃত জীবন এসব কথা স্বীকার করেছেন।  

জানা যায়, এ হত্যাকাণ্ডের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম দেওটি ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর নবী, স্বপন ও সেনবাগ উপজেলার মনির ও আবু সুফিয়ানকে আটক করেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর মোবাইল ফোনের কললিস্ট ট্র্যাক করে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতম্বপুর গ্রামের দিলসাদের ছেলে ও নিহত নারীর প্রেমিক জীবনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার জবানবন্দির ভিত্তিতে আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মালপত্র উদ্ধার করা হয়।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জান্নাতুল তার বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৮টার পর থেকে তার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাকে পাননি। পরে বুধবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি উঁচু সবজি ক্ষেত থেকে পাখির গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাখির ভাই বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২২
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।