ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২
তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

লালমনিরহাট: কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে দুপুর ১২টায় পানি প্রবাহ কমে বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল ৬টার দিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার) বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল ৯টায় ৯ সেন্টিমিটার কমে গিয়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরপর দুপুর ১২টায় পানি কমে বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার নিচ দিয়েয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষ বাংলানিউজকে জানান, গত সপ্তাহ থেকে থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে গত মাসের শুকনো মরুময় তিস্তার পানি ফুলে ফেঁপে উঠেছে। ফিরে পেয়েছে তিস্তা তার আপন সৌন্দর্য। নৌকা আর মাঝি মাল্লাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। জেলেরাও প্রায় ফিরে পেয়েছে তিস্তার পানি আর মাছ।

তবে পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অতিরিক্ত পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে জেলার ছোট ছোট নদী ও খাল ভরে গেছে পানিতে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি।

নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ।

পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। আদিতমারীর সলেডি স্প্যার বাঁধ-২য়ে যাওয়ার সড়কটির অর্ধেকাংশ ধসে গেছে। বাকিটুকু ধসে গেলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরবে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। সব মিলে নির্ঘুম রাত কাটছে তিম্তাপাড়ের মানুষের।

মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মতিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই দিন ধরে পানি বাড়লে এবং কমলেও গেল রাতে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে তিস্তার পানি। নদীপাড়ের অধিকাংশ ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। গবাদি পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। নদী তীরবর্তী প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার পৌঁছাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ পয়েন্টে তিস্তার পানি সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় ৯ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে বৃষ্টির কারণে পানি প্রবাহ কমা-বাড়ার মধ্যেই থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২২

আরএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।