ঢাকা, রবিবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ জুন ২০২৪, ২৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

জ্যামে পড়ে আর পচবে না কাঁচামাল

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২২
জ্যামে পড়ে আর পচবে না কাঁচামাল ছবি: ডিএইচ বাদল

পদ্মা সেতু এলাকা ঘুরে: উদ্বোধনের অপেক্ষায় পদ্মা সেতু। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এ সেতুটির ফলে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের যাতায়াত হবে আরও সহজ ও সময় সাশ্রয়ী।

বিশেষ করে এ সেতুর ফলে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও নড়াইলের সঙ্গে ঢাকার যাত্রাপথে সময় লাগবে ৭০ থেকে ৮০ মিনিট। আর এ কারণেই নতুন স্বপ্নের আশায় বুক বাঁধছেন লাখো মানুষ। যাদের অন্যতম একটি শ্রেণি ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।

সম্প্রতি পদ্মা সেতু এলাকা ঘুরে এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমনটাই। তারা জানিয়েছেন ফেরিতে এখন অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হলেও সেতু হলে আর সেটি থাকবে না। এছাড়া চিকিৎসা, ব্যবসা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ হাজারো উপকার আসবে এ অঞ্চলে।

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের স্থানীয় বাসিন্দা হৃদয় মোল্লা বলেন, দক্ষিণ অঞ্চলের ২১টি জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি লাভবান আমরা, শরীয়তপুর জেলাবাসী। এর ফলে ২ ঘণ্টার মধ্যেই আমরা খুব সহজেই ঢাকা পৌঁছাতে পারবো। বিগত দিনে আমরা দেখেছি, ফেরিতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়। অনেক সময় সবজি, কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া জেলায় সদর হাসপাতাল ছাড়া ভালো কোনো হাসপাতালও নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে ফেরিতে করে ঢাকায় রোগী নিয়ে যেতেও অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

তিনি আরও বলেন, ১০ বছর আগে যদি দেখি, তবে তখন শরীয়তপুরের যে জমির মূল্য আর এখন যে মূল্য, তার মধ্যে অনেক পার্থক্য। পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক দিক থেকেও শরীয়তপুর যথেষ্ট লাভবান। এছাড়া এ এলাকার অনেক মানুষের কর্মক্ষেত্র হবে এ সেতু ঘিরে।

আরিফ হাসান নামে জাজিরা এলাকার স্থানীয় এক কৃষক ও ব্যবসায়ী বলেন, আমি নিজে কৃষি কাজের পাশাপাশি মৌসুমী শাক-সবজি ও ফলের ব্যবসা করি। এমন অনেক হয়েছে যে, রাতে ট্রাকে মাল নিয়ে ফেরি আর জ্যামের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। পরে যখন ঢাকায় মাল পৌঁছেছে, তখন তার অনেকগুলোই নষ্ট হয়েছে। এখন সেতু হলে এ সমস্যাটা আর হবে না। আমরা দেড়-দুই ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীতে পৌঁছাতে পারবো।

ইমতিয়াজ আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, সেতু উদ্বোধন হলে ঢাকা এখন আরও নিকটবর্তী হওয়ায় অনেক শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে এ অঞ্চলে। বিশেষ করে ঢাকার কাছে হওয়ায় অনেকেই এ অঞ্চলকে বেছে নেবেন ব্যবসার সম্ভাবনাময় জায়গা হিসেবে। সেখানে কর্মসংস্থান হবে অনেকের। এটি এ অঞ্চলের ব্যবসার জন্য একটি নতুন দুয়ার উন্মোচন করবে, যা এ অঞ্চলের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

এদিকে পদ্মা সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য যা দরকার, এর প্রায় সব কাজই সম্পন্ন হওয়ার পথে। এখন যেসব কাজ চলমান আছে, এর বেশির ভাগই যানবাহন চলাচলের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ নেই। তবে বাকি টুকটাক কাজ আগামী ১৫ জুনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।  

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সেতুতে টুকিটাকি কাজ চলছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে, আগামী ১৫ জুনের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করা হবে। আগামী ২৫ জুন সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে যত ধরনের প্রস্তুতি দরকার, তার সবই নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।