ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

তিন বছর ধরে নির্যাতনের শিকার শিশুকে উদ্ধার করলো পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০১ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২২
তিন বছর ধরে নির্যাতনের শিকার শিশুকে উদ্ধার করলো পুলিশ নির্যাতিত শিশু।

 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিরাজগঞ্জ: পান থেকে চুন খসলেই নির্যাতনের খড়গ নেমে আসতো লিপি খাতুনের ওপর। জোর করে তাকে দিয়ে করানো হতো বড় মানুষের কাজ।

তারপরও রেহাই ছিল না তার। তিন বছর ধরে নিরবে নির্যাতন সইতে হয়েছে ১১ বছরের এ শিশুটিকে। অবশেষে স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে অসহায় এ শিশুটিকে উদ্ধার করলো পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সয়াধানগড়া মধ্যপাড়া মহল্লার ব্যাংকার আলী আজাহারের বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার পুত্রবধূ নির্যাতনকারী জুথি খাতুনকে আটক করে পুলিশ। তার স্বামীর নাম তারেক গোলাম।  

নির্যাতিত শিশু লিপি খাতুন কুড়িগ্রাম জেলার কচাকাটা উপজেলার পূর্বকেদার গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ব্যাংকার মো. আলি আজাহারের বাড়িতে তিন বছর ধরে কাজ করতো লিপি। তিন বছর ধরেই গৃহকর্ত্রী জুথি তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন করতো। বেশ কয়েকদিন ধরে এলাকাবাসী ওই শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়টি লক্ষ্য করছিল। শুক্রবার দুপুরের দিকে স্থানীয়রা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।  

লিপি খাতুন বলে, তাকে বিভিন্ন সময়ে লাঠি, তরকারির চামচ দিয়ে মারতো এবং গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাকা দিতো। এছাড়া চর-থাপ্পর আর কিল ঘুষি সবসময়ই মারতো। কাউকে কিছু বললে খালাম্মা হুমকি দিতো।  

পাশের বাড়িতেই কাজ করে ওই শিশুটির বড় বোন মোহসিনা সুমি। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বোনকে টয়লেটে আটকে রেখে নির্যাতন করে। আমি পাশের বাড়িতে কাজ করলেও আমার সঙ্গে দেখা করতে দিত না। আমি কখনো দেখা করতে এলেও ভেতরে ঢুকতে দিত না। আজকে এলাকাবাসীর মুখে শুনে আমি এসেছি। এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে লিপিকে উদ্ধার করা হয়।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নির্যাতিত শিশুটির পরিবার থানায় অভিযোগ করলে গৃহকর্ত্রী জুথি খাতুনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।