ঢাকা, সোমবার, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

কিউআর কোডের নিয়োগপত্র, যোগদানের সময় জানলেন ভুয়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
কিউআর কোডের নিয়োগপত্র, যোগদানের সময় জানলেন ভুয়া

ঢাকা: বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির নামে ভুয়া প্রশ্ন ও নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুরিশ। তারা হলেন- মো. মোশারফ হোসেন ও মো. জিয়া উদ্দিন।

সোমবার (১৬ মে) দিনগত রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আনন্দ নগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন, ৭ টি সিম কার্ড, বিভিন্ন চাকরি ভুয়া প্রশ্নপত্র, প্রবেশপত্র এবং নিয়োগপত্র জব্দ করা হয়।

ডিবি জানায়, গত ১৫ মে রাতে এক ভুক্তভোগী এ বিষয়ে বনানী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর মামলার ছায়া তদন্তের ধারাবাহিকতায় প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, চক্রটি বিভিন্ন দপ্তরের চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো সংগ্রহে রাখতো। পরবর্তীতে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলতেন এবং সাধারণ চাকরিপ্রার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে নিজেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেনে। এভাবে তাদের বিভিন্ন পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন তারা।

এজন্য প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে জীবন বৃত্তান্ত, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি ও অন্যান্য সব ডকুমেন্টস সংগ্রহ করতেন চক্রের সদস্যরা। পরে ভুয়া প্রবেশপত্র তৈরি করে প্রার্থীর ই-মেইলে পাঠাতেন। এরপর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নিয়ে প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষার জন্য মনোনীত হয়েছেন বলে জানাতেন।

তিনি বলেন, কিছুদিন পরে ভুয়া নিবন্ধিত সিম কার্ডের মাধ্যমে অপর এক ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পুনরায় কল করে মেডিক্যাল ও অন্যান্য খরচ বাবদ কিছু টাকা দিতে বলতেন। টাকা পাওয়ার পর চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য চাকরি প্রত্যাশীদের কিউআর কোড জেনারেটর (QR Code Generator) সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রার্থীর নাম ঠিকানা সম্বলিত একটি ‘কিউআর কোড’ তৈরি করে ভুয়া নিয়োগপত্রে সেটি স্থাপন করতেন।

এরপর প্রার্থীকে বলা হতো, ‘কিউআর কোড স্ক্যানার’ দিয়ে আপনার নিয়োগপত্রটি সঠিক কি-না যাচাই করুন। প্রার্থী তার মোবাইলের কিউআর কোড স্ক্যানার দিয়ে ওই নিয়োগপত্র পরীক্ষা করলে নিজের তথ্য দেখতে পেতেন এবং চুক্তির সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করতেন। পরবর্তীতে এই নিয়োগপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলে জানতে পারেন নিয়োগপত্রটি ভুয়া।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেফতার দুইজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র কোনভাবেই আগে পাওয়ার সুযোগ নেই। কেউ প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রস্তাব দিলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরামর্শ দেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২২
পিএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।