খুলনা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে যে কোস্টগার্ডের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখন সত্যিকার অর্থে ‘গার্ডিয়ান অব সি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার (১১ মে) দুপুরে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য নির্মিত ১টি ফ্লোটিং ক্রেন, ২টি টাগ বোট, ৬টি হাইস্পিড বোট এবং নারয়ণগঞ্জের ডিইডব্লিউয়ে নির্মিত ১টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বাণিজ্যের নব্বই শতাংশই সাগর পথে সম্পন্ন হয়। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে নৌ-সীমানা নির্ধারিত হওয়ায় বঙ্গোপসাগরে বিশাল সম্পদের ভাণ্ডার আমাদের অধিকারে এসেছে। এগুলো আহরণ এবং সাগরে চলাচালরত জাহাজের নিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়াতে বহুমূখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। কোস্টগার্ডের জন্য খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত এসব জলযান হস্তান্তরের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা আরও বাড়বে। তিনি এসব বোটের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার জন্য নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানান।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভেন লিউইন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, খুলনা নেভাল এরিয়ার কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আনোয়ার হোসেন ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী। খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর এম সামছুল আজিজ এতে সভাপতিত্ব করেন।
হস্তান্তর শেষে মন্ত্রী টাগবোট ঘুরে দেখেন এবং এর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি কখনোনই শ্রীলঙ্কার মতো হবে না। বিএনপি দ্বিবাস্বপ্ন দেখছে, ক্ষমতায় এসে তারা আবার দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যাবে। কিন্তু জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। জনগণের আস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। জনগণ জানে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। কারণ তিনি জনগণকে যা প্রতিশ্রুতি দেন তা বাস্তবায়ন করে দেখান।
উল্লেখ্য, টাগ বোট দুটি ৩৫০০ টন ওজনের যে কোনো জাহাজের বার্থিং/আন বার্থিং, টোউ, পুশ/ পুল অপারেশন ছাড়াও ফায়ার ফাইটিং, অন্য জাহাজের দুর্ঘটনাকালীন সহযোগিতা, ডুবন্ত জাহাজের উদ্ধার অভিযান ইত্যাদি জরুরি কাজ সম্পাদনে ব্যবহৃত হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সব জাহাজের বিভিন্ন অফশোর সাপোর্ট কার্যাবলি সম্পাদনেও সক্ষম হবে। এছাড়া অন্যান্য জলযানগুলো দ্বারা উপকূলীয় এলাকায় নিয়মিত টহল দেওয়া, চোরাচালান বিরোধী অভিযান, মাদক পাচার বিরোধী অভিযান, দুর্ঘটনা পরবর্তী উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ ইত্যাদি নানাবিধ কার্যক্রমসহ বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সার্বিক অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২২
এমআরএম/এমএমজেড