ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ মে ২০২৪, ০৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ইউপি কার্যালয় থেকে চাল গায়েব! রহস্যের জট খোলেনি ৩ দিনেও

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২২
ইউপি কার্যালয় থেকে চাল গায়েব! রহস্যের জট খোলেনি ৩ দিনেও

নোয়াখালী: নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নে সরকারের ভিজিএফ কর্মসূচির ৪০ বস্তা চাল গায়েবের ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও সেগুলো উদ্ধার হয়নি। এমনকি চালগুলো কোন জায়গা থেকে গায়েব হয়েছে, কে বা কারা গাবেব করছে -সেই রহস্যের জট খোলেনি।

এ ঘটনায় ইউপি সচিবের দায়ের করা মামলায় গ্রাম পুলিশ মো. হারুনকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত সোমবার (২৫ এপ্রিল) সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে বাটইয়া ইউনিয়নের গরীব, অসহায় ও দুস্থদের জন্য পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারের বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচির ৪২০ বস্তা চাল উত্তোলন করে রাতে সেগুলো ইউপি কার্যালয়ে রাখা হয়। পরদিন দুস্থদের মাঝে চাল বিতণের সময় বস্তা কম দেখে সন্দেহ হলে গণনা করে ৪০ বস্তা চাল কম পাওয়া যায়।

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, সরকারি ভিজিএফ কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগে গ্রাম পুলিশ হারুনের বিরুদ্ধে বুধবার থানায় মামলা হলে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় গ্রাম পুলিশ মো. হারুনকে ফাঁসিয়ে দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শাহীন নিজের অপরাধ আড়াল করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

বাটইয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকারি গুদাম থেকে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রম্যানের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই চাল উত্তোলন, সংরক্ষণ এবং যথাযথ নিয়ম মেনে বিতরণ করা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব। চাল বেহাত হলে তার দায়দায়িত্বও চেয়ারম্যানেরই, অন্য করো হতে পারে না।

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে গ্রাম পুলিশ হারুন তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে বলেন, তিনি চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার পক্ষ থেকে সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে ভিজিএফ কর্মসূচির ৪২০ বস্তা চাল উত্তোলন করেন। এরপর ওই দিনই চালগুলো ইউনিয়ন পরিষদে চেয়াম্যানের উপস্থিতিতে পৌঁছে দেন। চেয়ারম্যান তার কাছ থেকে কাগজপত্রসহ চালগুলো বুঝে নেন।

তবে, ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন শাহীনের দাবি তিনি বা তার কোনো লোক ভিজিএফ কর্মসূচির চাল আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত নন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে বিতরণের সময় চালের মজুত দেখে আমার সন্দেহ হয়। পরে গণনা করে দেখি ৪০ বস্তা চাল নেই।

তখন আমি গ্রাম পুলিশ হারুনকে ডেকে চাল কত বস্তা আনা হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান ৪২০ বস্তা। সে হিসাবে বিতরণের পর অবশিষ্ট বস্তা গুনে দেখি ৪০ বস্তা চাল নেই। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে চাল ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরপরই আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করি। এরপর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাও ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। এ বিষয়ে ইউপি সচিব বাদী হয়ে গ্রাম পুলিশ হারুনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ইউএনও আতিকুর মামুন জানান, এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, গ্রাম পুলিশ সদস্য মো. হারুন যেহেতু চালগুলো সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেছিলেন তাই প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে তার নামে মামলা করা এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় অন্য যাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠছে তাদের বিষটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, ২৯ এপ্রিল, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।