ঢাকা, শুক্রবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ মে ২০২৪, ০৮ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

তৃতীয় ধাপে পাবনায় ইছামতি পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
তৃতীয় ধাপে পাবনায় ইছামতি পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু ইছামতি পাড়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু

পাবনা: দীর্ঘ দু’মাস পরে উচ্চতর আদালতের নির্দেশে তৃতীয় ধাপে পাবনা মধ্য শহর দিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুর হয়েছে।  

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে পৌর এলাকার শালগাড়িয়া মহল্লা ও গাংকুলা এলাকা থেকে নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও পাবনা পৌরসভা।

পৌর এলাকার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে এক কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন তিন কিলোমিটার এলাকার উচ্ছেদ কার্যক্রম চলবে। তাতে এখনো নদীর দুই পাড়ে প্রায় ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

২০২১ সাল থেকে ইছামতি নদী উদ্ধার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিকে শহরের লাইব্রেরি বাজার বড় ব্রিজ থেকে দক্ষিণ মুখে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়ে নদীর এক কিলোমিটার খনন কাজ চলছে। একই সঙ্গে পদ্মা নদী থেকে চলে আসা নদীর উৎস্যমুখে আরও ২ কিলোমিটার সংযোগ খাল খনন করা হয়েছে। এর পরে দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হাইকোর্টের নির্দেশে আবারও উত্তরমুখে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে বৈধ বসতি দাবিদারদের করা উচ্চতর আদালতে মামলা নিস্পত্তি না হওয়ায় সেই সব স্থাপনা বাদ রেখে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায় প্রশাসন।

এদিকে উচ্চতর আদালতের ৪৩টি মামলার নিস্পত্তি শেষে হাইকোটের্র নির্দেশে তৃতীয় ধাপে আবারও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে নিন্ম আদালতে চলমান ছয়টি মামলা থাকায় শুধু সেই সব স্থাপনা রেখে বাকি সব অবৈধ স্থাপনা আগামী এক মাসের মধ্যে নদীর সীমানা দখলমুক্ত করা হবে বলে জানান উচ্ছেদ সংশ্লিষ্টরা।

পাউবো পাবনার তথ্যানুযায়ী প্রায় সাড়ে ৩০০ তালিকাভুক্ত অবৈধ দখলদার রয়েছে নদীর দু’পাড়ে। সিএস নকশা অনুযায়ী পূর্ব নির্ধাররিত নদীর সীমানা অনুসারে সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। তবে পৌর এলাকার ভেতরে ও বাইরে সব মিলিয়ে নদী দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে পৌর এলাকার মধ্যে রয়েছে সারে চার কিলোমিটার নদী। এদিকে নদীর এক পাশে সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী খনন কাজ চলছে। তবে উচ্ছেদ না হওয়া নদী তীরবর্তী ২৩৫টি বৈধ দাবিকৃত দখলদারদের করা উচ্চতর আদালতের মামলার শুনানি শেষে চলতি মাসের ২২ এপ্রিল মামলা নিস্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরই সঙ্গে ইছামতি নদী খনন কাজে আর কোনো বাধা থাকলো না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল হাসান, পাউবো পাবনার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহীন রেজা, পাবনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

এদিকে, উচ্ছেদ কার্যক্রম নিয়ে ভুক্তভোগীরা জানান, উচ্ছেদ কার্যক্রম করার আগে আইনগত ভাবে কোনো নোটিশ করা হয়নি তাদের। এই রমজানের আগে এই ধরনের বসতি উচ্ছেদ করা আইন সম্মত নয়। আমরা আইনগত ও সরকারের কাছে সঠিক বিচার প্রত্যাশা করেছিলাম। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে আমরা বাধা দিচ্ছি না। শত বছরের পৈত্রিকভাবে ক্রয় করা জমি আজ অবৈধ হয়ে গেছে। তবে সরকার কেন আমাদের কাছ থেকে খাজনা খারিজ নিয়েছে। জমি রেজিস্ট্রি করেছে, পৌর কর নিয়েছে, পৌরসভা অনুমদন দিয়েছেন বাড়ি তৈরি করার। আজ আমরা অবৈধ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার আমাদের কাছে থেকে জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের খতিপূরণ দিতে পারতেন। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এদিকে একটু নজর দেওয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।