ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি

অরকা হোমসে বেড়ে উঠছে রানা প্লাজা ধসে হতাহতদের সন্তানরা

মোমিনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
অরকা হোমসে বেড়ে উঠছে রানা প্লাজা ধসে হতাহতদের সন্তানরা

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় অরকা হোমসে বেড়ে উঠছে ঢাকার সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে হতাহতদের সন্তানরা। সেখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের জন্য রয়েছে আধুনিক জীবনযাপনের সব আয়োজন।


 
অরকা (ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেটস অ্যাসোসিয়েশন) মূলত: রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের একটি সংগঠন।
 
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বরে উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠা করা হয় তিন তলাবিশিষ্ট এই অরকা হোমস ভবন। ভবনের দোতলায় থাকে ছেলেরা। আর মেয়েরা থাকে তিনতলার কক্ষগুলোতে। পরবর্তীতে আরও একটি সম্প্রসারিত তিনতলা ভবন নির্মিত হয়।
 
অরকা হোমসে লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। আছে বিশাল খেলার মাঠ। এখানে থাকা শিশু-কিশোরের সবাই পড়াশোনা করছে পাশের মুসলিম একাডেমিতে। এসব শিশু-কিশোরদের দেখভালের জন্য রয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক। তাদের জন্য রাখা হয়েছে গৃহশিক্ষক, ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থা এমনটি শরীর চর্চার শিক্ষকও রয়েছে।  
 
গাইবান্ধার ১০, পাবনার ৭, জামালপুরের ১, রংপুরের ৮, সিরাজগঞ্জের ২, দিনাজপুরের ২, ঢাকা সাভারের ১৯ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানের ১৫ জনসহ মোট ৬৪ জন শিশুর ঠাঁই হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। এদের কেউ মাকে হারিয়েছে। কারো মা থাকলেও বাবা নেই। এখানে শুধু আশ্রয় নয়, এখানে এসে তারা পেয়েছে নতুন করে জীবন শুরু করার প্রেরণা।
 

অরকা হোমসের পরিচালক মো. জাহিদুল হক বলেন, দেশ-বিদেশে থাকা অরকার সদস্যদের আর্থিক সহায়তার ভিত্তিতেই মূলত আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যয় মেটানো হয়। এছাড়া বিজিএমইএ হোমসের শিশুদের জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়। এখানে বসবাসকারী শিশুদের লেখাপড়া শেষ করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। শিশুরা যেন বাবা-মায়ের মতো স্নেহ পায়, সে জন্য খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানকার শিশুরা যেদিন সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে, সেদিনই আমাদের উদ্দেশ্য সফল হবে।
 

অরকা হোমসের কেয়ারটেকার নুরজাহান বেগম বলেন, এসব শিশুকে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করে আসছি। তারা একটু ব্যথা পেলে আমারও কষ্ট লাগে। তাদের পড়াশোনা, খেলাধুলা, এমনকি গোসল করিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে ওদের যাবতীয় কাজকর্ম মমতার সঙ্গে করে থাকি।
 
জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সংঘটিত রানা প্লাজা ট্রাজেডি বিশ্বের অন্যতম শিল্প দুর্ঘটনা। সরকারি হিসেবে এ দুর্ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৭৫ জন নারী-পুরুষ। আহত ও পঙ্গুত্ববরণ করেন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।