ঢাকা, সোমবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ মে ২০২৪, ১১ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ত্রিশালে হাবিব-রহিমা দম্পতির পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ  

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
ত্রিশালে হাবিব-রহিমা দম্পতির পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ  

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বাসিন্দা রিকশাচালক হাবিবুর রহমান (৬০)। চার ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সাত সদস্যের পরিবার তার।

র্দীঘ জীবন রিকশা চালিয়ে সংসারের ঘানি টানলেও বর্তমানে বয়স এবং অসুস্থতার কারণে এখন আর পারেন না তিনি। এ কারণে কয়েক বছর আগে রিকশা চালানো ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এর পর থেকে যেন পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন অসহায় হাবিবুর রহমান।

তার বড় ছেলে (২১) একটি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের কাজ করে, দ্বিতীয় ছেলে (১৭) পত্রিকা বিলি করে। অন্য দুই ভাই বয়সে অনেক ছোট। তাদের দুই ভাই যা উপার্জন করে তা দিয়ে সংসার চলে না। কোনোভাবে কষ্টে দিন কাটছে পরিবারটির।

এ অবস্থায় সংসার পরিচালনায় অবদান রাখার আশায় হাবিবুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন ও তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস লিমা শিখেছে সেলাইয়ের কাজ। কিন্তু নিজের সেলাই মেশিন না থাকায় পরিবারের উপার্জনে কোনো অবদান রাখতে পারছেন না তারা।  

বিষয়টি জানতে পেরে সহায়-সম্বলহীন এই অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ। ফলে অসহায় এ পরিবারটিকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ হিসেবে শুভসংঘ হাবিব-রহিমা দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছে একটি সেলাই মেশিন।  

শনিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা শুভসংঘের আয়োজনে ওই অসহায় দম্পতির হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আক্তারুজ্জামান।  

এ সময় শুভসংঘের সভাপতি ফাতেহ আলম শিশিরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান সবুজ, ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শামীম আজাদ আনোয়ার, খোরশিদুল আলম মজিব, ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম শামীম, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি রেজাউল করিম বাদল, ত্রিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জোবায়ের হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক ফয়জুর রহমান ফরহাদ, প্রচার সম্পাদক মামুনুর রশীদসহ শুভসংঘের বন্ধুরা।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আক্তারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করার জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করার পাশাপাশি অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। আর এই ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের সর্ববৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ সারাদেশে যেভাবে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে তা সত্যিই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যা আমাদের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয়। দেশের অসহায় মানুষকে স্বাবলম্বী করতে তারা যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে বসুন্ধরা গ্রুপকে স্বাগত জানাই। বসুন্ধরা গ্রুপের মতো অন্যদেরও আর্তমানবতার সেবায় এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।

অসহায় বৃদ্ধা রহিমা খাতুন আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, আমার স্বামী রিকশা চালিয়ে আমার ও সন্তানদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। অসুস্থতা আর বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন তিনি আর সংসারের ঘানি টানতে পারেন না। আমি স্বামী সন্তানদের নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করতাম। আপনাদের দেওয়া সেলাই মেশিন পেয়ে আমার অনেক উপকার হলো। আমি ও আমার মেয়ে এই সেলাই মেশিন দিয়ে আয় রোজগার করে সংসার চালাতে পারব। আমি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব আমার এই অসহায় অবস্থায় পাশে দাঁড়ানোর জন্য।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।