ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযানে সেনাবাহিনীও অংশ নেবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযানে সেনাবাহিনীও অংশ নেবে’

ঢাকা: রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে যদি কোনো অভিযান প্রয়োজন হয়, সেনাবাহিনীও তাতে অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, এপিবিএন, র‌্যাব ও আনসার যৌথভাবে সার্বক্ষণিক যে টহল দিচ্ছে, সেটা আরও জোরদার করা হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ক্যাম্পের বাইরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাবের টহল চলবে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে।

রোববার (১০ এপ্রিল) বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির চতুর্থ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

ক্যাম্পের বাইরে যাতে রোহিঙ্গারা আসতে না পারে, এ জন্যই বেষ্টনী দিচ্ছি উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেষ্টনী তৈরি করার জন্য আমরা সেনাবাহিনীকে কাজ দিয়েছিলাম, সেটার প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বেষ্টনী আর ২০ ভাগ যেটা বাকি আছে, সেটা শেষ হলে আমরা আরও কঠোর হবো। অনুমতি ছাড়া কাউকেই আমরা বের হতে দেবো না। তখন কতজন বের হয়ে গেছে, সেই তথ্য ইউএনএইচসিআর দিতে পারবে। তাদের কাছে আপডেট ডাটা আছে। আমরা তাদের রিকোয়েস্ট করবো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং তা চলমান থাকবে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ার তৈরি হয়েছে, এখানে রাস্তা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। সেখানে টাওয়ারগুলোতে এপিবিএন থাকবে আর রাস্তায় টহল দেবে, কোনো রোহিঙ্গা যাতে ক্যাম্পের বাইরে প্রয়োজন ও অনুমতি ছাড়া যেতে না পারে, এটা আমরা জোরদার করছি।

তিনি বলেন, আমরা দেখছি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বয়সভিত্তিক রেশন না দিয়ে ব্যক্তি হিসেবে দেওয়া হয়। একদিনের শিশুকে যে রেশন দেওয়া হয়, একজন প্রাপ্ত বয়স্ককেও সেই রেশন দেওয়া হচ্ছে। আমরা বলেছি, এটা বয়সভিত্তিক যেন দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে এবং আশেপাশে যাতে মাদক ব্যবসা না হয়, সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নাফ নদীতে মাদক চোরাচালান রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মাদক ব্যবসায় জড়িত হয়ে যাচ্ছে। আমরা এ জায়গায় কঠোর হতে যাচ্ছি। আমরা কোনোভাবেই আমাদের সীমানা পেরিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যাতে মাদক ব্যবসা না করতে পারে, সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি। আমরা যেটা অনুমান করছি, এখানে (রোহিঙ্গা ক্যাম্পে) মাদক স্টোর করা আছে। এরমধ্যে আমরা কিছু ধরেও ফেলেছি। এরসঙ্গে যারা জড়িত তারা ধরা পড়বে।

রোহিঙ্গারা আসার পর হাতের ছাপ নেওয়া হয়েছে, তারপরও তারা কীভাবে পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব স্বরামন্ত্রী বলেন, যাদের চোখের ছাপ ও আঙুলের ছাপ আমরা নিয়েছি, তারা কোনো ক্রমেই পাসপোর্ট পাচ্ছে না। আগেও কিছু রোহিঙ্গা এখানে অবস্থান করতো। কিছু পালিয়েও এসেছে। আমরা যত দূর পারছি, এজন্যই ইউএনএইচএসসিআরের কাছে ডাটা আছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে আমরা এটা বন্ধ করবো।

রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে না পারে, সেজন্য ইউএনএইচসিআরের (জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা) ডাটাবেইজ ব্যবহার করা হবে বলেও জানান তিনি।

সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আথতার হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।