ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সেই ইমনের দায়িত্ব নেবে কে?

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২২
সেই ইমনের দায়িত্ব নেবে কে?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ক্ষমতাসীন দুই গ্রুপের রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে আম বাগানে কুড়িয়ে পাওয়া ককটেল বিস্ফোরণে আহত ইমনের অর্থের অভাবে চোখ নষ্ট হতে চলেছে। এ ঘটনার ১৭ দিন পার হলেও খোঁজ রাখেনি কেউ।

উল্টো অসুস্থ ইমনকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে তার দরিদ্র পরিবার।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্র রিমন ওরফে ইমন (১১) শিবগঞ্জ পৌর চতুরপুর মহল্লার আনারুল ইসলামের ছেলে এবং আলীডাঙা জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে ইমন।  

বুধবার (৬ এপ্রিল) বিকেলে শিবগঞ্জ পৌর চতুরপুর মহল্লায় ইমনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে বিছানায় শুয়ে আছে ইমন। পাশেই বসা মা শিউলি বেগম। যে ইমনের এখন পড়ার টেবিলে থাকার কথা কিন্তু সে এখন চোখ হারানোর শঙ্কা নিয়ে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে আছে।

ইমনের মা শিউলি বেগম জানান, ছেলের চিকিৎসার জন্য বাড়ির চারটি ছাগল বিক্রি করা হয়। একইসঙ্গে আশ-পাশের লোকজনদের কাছ থেকে কিছু টাকা কর্জ নিয়ে ছেলের চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসকরা বলেছেন, এক মাস পর আবার ছেলেকে দেখিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তিন মাস পর ছেলের অপারেশন করা লাগবে। স্বামী একজন ভ্যানচালক। মাঝেমধ্যে তাঁত শিল্পের কাজ করে কোনোমতে সংসার চলে। কিন্তু ছেলে চিকিৎসা করাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ ওই স্কুলছাত্রের মায়ের।

আর অসহায় বাবার প্রশ্ন ’আমার ছেলে তো কোন দোষ করেনি। তবে, কেন ওদের হিংসার বলি হবে আমার সন্তান। এর দায় কার?

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল ইসলাম আজু জানান, যদি পরিবার সহযোগিতা চান, তাহলে সাধ্যমত সহায়তা করা হবে। অন্যদিকে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী জোবায়ের আহাম্মদ জানান, পরিত্যক্ত ককটেল বিস্ফোরণে শিশু আহতের ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

এর আগে, ১৭ মার্চ আওয়ামীলীগের বিবদমান দুই গ্রুপ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করে। প্রশাসন স্টেডিয়াম এলাকায় সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। সেদিন দুপুরে ইমন ও তার ছোট ভাই ইকবাল শিবগঞ্জ স্টেডিয়াম সংলগ্ন পশ্চিম দিকের আমবাগানে গাছের পাতা ও ডালপালা কুড়াতে যায়। এ সময় রিমন একটি পরিত্যক্ত ককটেল দেখে পা দিয়ে চালানোর চেষ্টা করলে ককটেলটি বিস্ফোরিত হয়। এতে রিমনের বাম চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান জখম হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।