ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অটোরিকশা ছিনতাই করতে কিশোরকে হত্যা, গ্রেফতার ৫

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
অটোরিকশা ছিনতাই করতে কিশোরকে হত্যা, গ্রেফতার ৫

নরসিংদী: নরসিংদীর মাধবদীতে যাত্রীবেশে অটোরিকশা চালক অন্তর মিয়া (১৩) নামে এক কিশোরকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করার ঘটনায় আন্তজেলা ছিনতাই চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।  

রোববার (০৫ ডিসেম্বর) রাতে জেলার শিবপুর উপজেলা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড, গামছা ও ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। সোমবার দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।

গ্রেফতাররা হলেন- আল আমিন (৩৬), বকুল মিয়া (৪৫), অহিদুল ইসলাম মাতাব্বর, ছগির (৩১) ও সাজ্জাদ (৩২)।

নিহত অন্তর মিয়া মাধবদীর খিলগাঁও এলাকার মো. কামাল হোসেনের ছেলে। নিখোঁজ হওয়ার আগে অসুস্থ বাবার ইজিবাইক নিয়ে উপার্জনের জন্য সে সড়কে নেমেছিল।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুধবার দুপুরে অন্তর অটোরিকশা নিয়ে উপার্জনের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে অটোরিকশা চালাতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু রাতে সে আর বাড়িতে ফেরেনি। পরে তাকে বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। না পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের লোকজন মাধবদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।  

ওই দিন বিকেলে মাধবদী থানার বালাপুরের দরগাকান্দা গ্রামের একটি ডোবায় একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গিয়ে অন্তরের মরদেহ শনাক্ত করে। পরে মাধবদী থানার পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।  

এরপরই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ। রোববার সন্ধ্যায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জেলার শিবপুর উপজেলা থেকে অহিদুল ইসলাম মাতাব্বরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুরে অভিযান চালিয়ে আল আমিন, বকুল, ছগির ও সাজ্জাদকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার রড, গামছা ও ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অন্তরকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন থানা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। তারা সকলেই অটোরিকশা ছিনতাই চক্রের সদস্য। তারা নিয়মিত দেশের বিভিন্ন স্থানে যাত্রীবেশে অটোরিকশা ছিনতাই করে। তারা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ছিনতাই করে থাকে। একটি গ্রুপ টার্গেট ঠিক করে আরেকটি গ্রুপ তা বাস্তবায়ন করে থাকে। বুধবার রাতে তারা অন্তরের অটোরিকশাটি বালাপুরের একটি ওয়াজ মাহফিলে যাওয়ার কথা বলে ৪০০ টাকায় ভাড়া নিয়েছিল। যখন অন্তর তাদের নিয়ে যাওয়ার সময় নির্জন এলাকা দেখে তাকে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে ফেলে। পরে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে গামছা দিয়ে হাত-পা বেঁধে ডোবায় ফেলে অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আর আন্তজেলা ছিনতাই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারে আমরা কাজ করছি। আশাকরছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।