ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমি আসবো...

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২১
আমি আসবো...

বরিশাল: দক্ষিণবঙ্গের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের ‘পায়রা সেতু’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে বঙ্গভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গাড়ি চালিয়ে আগামীতে এই সেতু পার হওয়ার আকাঙ্খা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আছে বলেই আজ গণভবনে বসেও আপনাদের সঙ্গে মিলিত হতে পারছি, কথা বলতে পারছি। তবে এটা ঠিক আমি নিজে উপস্থিত থেকে যদি পায়রা সেতুর ওপর দিয়ে একটু গাড়ি চালিয়ে যেতে পারতাম বা সেতুতে নেমে যদি একটু দাঁড়াতে পারতাম, সেতুর ওপর দিয়ে পায়রা নদীটা দেখতে পারতাম সত্যিই খুব ভালো লাগতো।

দৃষ্টিনন্দন পায়রা সেতু

তিনি বলেন, যে নদীটা আমি সবসময় স্পিড বোটে চড়েছি, সেখানে যদি সেতুর ওপর দিয়ে হাঁটতে পারতাম তাহলে ভালো লাগতো। কিন্তু করোনার কারণে বলতে গেলে একরকম বন্দী জীবন তো, তাই সেটা আর হলো না। তবে আমার ইচ্ছা আছে একদিন গাড়ি চালিয়ে সেতুটা পার হবো। সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন, দৃষ্টিনন্দন সেতু তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে সেখানে অবশ্যই যাব। আমি আসবো এটা হলো বাস্তব।

এর আগে স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আশির দশকে একবার ছেলে-মেয়েসহ সবাই কুয়াকাটা যাবো বলে রওয়ানা দিয়েছিলাম। একটার পর একটা ফেরি পার হতে হতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পটুয়াখালী পৌঁছালাম। পটুয়াখালী থেকে আর কিছুতেই কুয়াকাটা পৌঁছাতে পারলাম না, ঘন কুয়াশার কারণে লঞ্চ পেলাম না, নদী পার হওয়া গেল না। বাধ্য হয়ে পটুয়াখালী থেকেই ফিরে আসি।

এরপর আরেকবার কুয়াকাটা গেলাম মিটিং করার জন্য, অনেকগুলো ফেরি পার হতে হয়েছে। তখন ওই অঞ্চলে শুরু হয়ে গেলো ঝড়। কুয়াকাটায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে সাগরের বুকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় হয়। আর যখন সূর্যাস্ত যায় তারপর আমরা দেখি চাঁদ উঠে আসে। বৈশাখী পূর্ণিমা দেখব সেই আকাঙ্খা নিয়ে গেলাম, কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে আমাদের সেখানে টিকে থাকাই মুশকিল ছিল। কারণ তখন সেখানে পাকা দালান বলতে তেমন কিছুই ছিল না। ছোট একটি ডাকবাংলো ছিল, আমাদের ওখানে থাকাটা দুঃসহ, আর ফেরিও তখন প্রায় ডুবে যাচ্ছিল। ওই অবস্থায় আমরা ওখান থেকে চলে আসি। তারপর থেকেই একটা আকাঙ্খা ছিল এই যোগাযোগ ব্যবস্থাটা আমাদের করতে হবে। চমৎকার এই জায়গাটা আমাদের দেশের মানুষ দেখতে পারবে না, এটা হতে পারে না।

রাতের পায়রা সেতু, উপর থেকে

উদ্বোধনের আগে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ ওই এলাকার ১২টি জেলা সবসময় অবহেলিত ছিল। তাদের অপরাধ কী ছিলো এটাই প্রশ্ন?প্রা কৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়িত এ অঞ্চলটাকে ক্ষতবিক্ষত করে, এই অঞ্চলের মানুষ সবসময় প্রাকৃতি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি বলেন, ওই অঞ্চলে কিছু ছিল না, কোনো কিছুই না। আমরা একের পর এক রাস্তাঘাট করে গেছি। বিশেষ করে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে আর্থ সামাজিক উন্নতি তরান্বিত হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ শুরু করি।

রাতের নয়নাভিরাম পায়রা সেতু

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বরিশাল বিভাগে শুধু রাস্তাই আমরা করিনি, সেখানে ক্যান্টনমেন্ট হয়েছে, একটি নৌ ঘাঁটি, বিমান ঘাঁটি হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোষ্টগার্ডের ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং কোষ্টগার্ড ঘাঁটি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে, বিজ গবেষণা কেন্দ্র করেছি গলাচিপায়, পায়রা বন্দর করেছি। ঠিক এভাবে পুরো বরিশালটা মিলিয়ে কিন্তু একটা কর্মযজ্ঞ চলছে।

তিনি বলেন, বরিশাল-পটুয়াখালীর একটি সংযোগ সৃষ্টি হবে এই পায়রা সেতুতে। পায়রা নদীর ওপর সেতু, তাই নদীর নামে সেতুর নাম হলে নদীটারও একটা পরিচয় পাওয়া যাবে। সেজন্য এ নামটা আমি পছন্দ করেছি। আর পায়রা তো শান্তির প্রতীক। এ সেতুটা হওয়ার পর এ অঞ্চলের মানুষের যে আর্থিক উন্নতি হবে, তার ফলে মানুষের মনে একটা শান্তি আসবে এবং তারা সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়:১২৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২১
এমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ