ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে প্রাণ যায় ৭ জনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
দুই বাসের পাল্লাপাল্লিতে প্রাণ যায় ৭ জনের সড়ক দুর্ঘটনা, সংবাদ সম্মেলন, সিআইডি,

ঢাকা: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল সড়কে ট্রাক ও বাসের সংঘর্ষে সাতজন নিহতের ঘটনায় বাসচালক মো. আনসার আলীকে (৩৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আনসার আলী শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার প্রতাব নগর গ্রামের মৃত লাল মামুনের ছেলে।

সিআইডি জানায়, গত ১৬ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার মহাখালী টার্মিনাল থেকে শেরপুরের উদ্দেশে সুপার এম এ রহিম পরিবহনের একটি বাস ও ময়মনসিংহের উদ্দেশে সৌখিন পরিবহনের একটি বাসযাত্রীসহ রওয়ানা দেয়। এই দুটি বাস পুরো রাস্তাই প্রতিযোগিতা করে চালাতে থাকে। মূলত এই কারণেই ত্রিশাল সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সাতজন যাত্রীর মৃত্যু হয়।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তদন্তকারী সংস্থার এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

তিনি বলেন, সোমবার ১৮ অক্টোবর সকালে নরসিংদীর মনোহরদী থানার গোতাশিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সুপার এম এ রহিম পরিবহনের বাসের (ঢাকা মেট্রো ব-১১-০১৪৮) চালক মো. আনসার আলীকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা এক ড্রাম ট্রাকের সঙ্গে যাত্রীবাহী এক বাসের মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা সংঘঠিত হয়। এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় ১০/১২ জনকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দু’জনের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় মো. তাজ উদ্দিন (৪৮) বাদী হয়ে বাস ও ডাম্প ট্রাকের অজ্ঞাতপরিচয় চালকদের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঘাতক চালককে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক বাসচালক জানান, গত ১৬ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহাখালী টার্মিনাল থেকে ৪২ জন যাত্রী নিয়ে শেরপুরের উদ্দেশে তিনি রওয়ানা হন। একই সময়ে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে ময়মনসিংহের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। প্রায় পুরো রাস্তায়ই তারা প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালাতে থাকেন। একপর্যায়ে ত্রিশাল থানাধীন চেলেরঘাট এলাকায় পৌঁছালে সৌখিন পরিবহন ও সুপার এম এ রহিম নামে বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতার এক পর্যায়ে সুপার এম এ রহিম পরিবহনের বাসটি দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় পার্কিং করা বিকল ড্রাম্প ট্রাকটিতে সজোরে ধাক্কা দিলে মুহূর্তেই বাসটি ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতেই সাতজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ঘাতক চালক আনসার আলী দ্রুত পালিয়ে যান।

সিআইডি কর্মকর্তা মুক্তা ধর বলেন, এই দুর্ঘটনায় নিহত সাতজনের মধ্যে দুইজন শিশু, দুইজন নারী ও তিনজন পুরুষ। এদের মধ্যে একই পরিবারের চারজন ছিলেন। তারা  হলেন- আজমল মণ্ডল ওরফে ফজু (৩৫), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৫), তাদের ছেলে মো. আমানুল্লাহ (৫), তাদের মেয়ে মোছা. মারিয়া আক্তার ওরফে আজমিনা (৮)। এছাড়া ফজলুল হকের শ্বশুর নজরুল ইসলাম (৫৫) এবং মো. সিরাজ (৩৫) ও হেলেনা (৪০)।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
এসজেএ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।