ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ওয়াসার কর্মচারীর দুই পক্ষের বাগ্-বিতণ্ডা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২১
ওয়াসার কর্মচারীর দুই পক্ষের বাগ্-বিতণ্ডা

ঢাকা: টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ‘ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের বর্তমান কমিটি সংবাদ সম্মেলনে করেছে। সংবাদ সম্মেলনের শেষে আয়োজনকারীদের অবৈধ বলে দাবি করেছেন আগের কমিটির নেতারা।

এই সময় দুইপক্ষ বাকযুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ‘ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির একাংশ। সংবাদ সম্মেলন শেষে এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান কমিটির সম্পাদক মো. শাহাব উদ্দিন সরকার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডে সংগঠিত বিভিন্ন অনিয়ম ও সমিতির ১৩২ কোটি টাকা ঢাকা ওয়াসারই কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আত্মসাৎ করেছেন। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচিত কমিটি ১০ মাসেও দায়িত্ব বুঝে পায়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় এ নির্বাচন আয়োজনে আপত্তি ছিল ওয়াসা কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর এক অফিস আদেশ জারি করে ঢাকা ওয়াসা।

ওই আদেশে জানানো হয়, কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে ওই বছরের ১ ডিসেম্বর ওয়াসা একটি অফিস আদেশ জারি করেছিল। কিন্তু নির্বাচন ঘিরে কর্মচারীরা এক কক্ষে ২০-৩০ জন অবস্থান করছেন। যা ওয়াসার ওই অফিস আদেশের পরিপন্থি।

ওয়াসা সচিব প্রকৌশলী শারমিন হক আমীর স্বাক্ষরিত ২৪ ডিসেম্বরের ওই অফিস আদেশে বলা হয়, করোনা সংক্রমণ ও বিস্তার প্রতিরোধে এবং ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সব ধরনের সভা, সমাবেশ, নির্বাচন, জমায়েত ও ভোটদান হতে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। আদেশ প্রতিপালনে ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে এই অফিস আদেশ অমান্য করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনকারীরা জানান, নির্বাচনের পর পর্যায়ক্রমে নির্বাচিত কমিটির ১০ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।

যদিও সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার জন্য ওয়াসা কর্তৃপক্ষ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ধন্যবাদও জানিয়েছে। আবার নির্বাচন করার কারণে করা বিভাগীয় মামলা ও কারণ দর্শানোসহ অন্যান্য নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা তুলে নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। আর ওয়াসার কাছ থেকে সমিতির প্রাপ্য এক মাসের মধ্যে ফিরিয়ে দিতে অনুরোধ করেছে নতুন কমিটি।

এ সময় সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত সাবেক কমিটির নেতা আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘এটা তো কোনো নির্বাচনই হয় নাই। ভোট পরছে অনলি টু পারসেন্ট (মাত্র দুই শতাংশ)। ’

লিখিত বক্তব্যে নতুন কমিটি বলছে, ৩০ সেপ্টেম্বর সমবায় অধিদপ্তর থেকে সমিতির ২০১৮-২০২০ সময়কালের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ১৬-জুলাই-২০১৭ হতে ৩০-জুন-২০১৮ তারিখ পর্যন্ত চুক্তি মোতাবেক পিপিআই নামীয় প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা হতে রাজস্ব আদায়ে ঠিকাদারি বিল বাবদ সমিতি মোট ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা এবং এ বিপুল পরিমাণ অর্থ থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে হিসাব বিবরণীতে মাত্র এক কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা হিসাবভুক্ত করা হয়।

আগের কমিটির অর্থ আত্মসাতের হিসাব দিয়ে তারা বলেন, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরের অবশিষ্ট ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকার কোনো হিসাব নেই। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ সমিতির অবৈধ ব্যবস্থাপনা কমিটির হাফিজ উদ্দিন, আতাউর রহমান মিয়া ও বাতিলকৃত ব্যবস্থাপনা কমিটির মো. আক্তারুজ্জামান, মো. জাকির হোসেন এবং পিপিআই পরিচালনা পর্ষদ হাফিজ উদ্দিন, মিঞা মো. মিজানুর রহমান, মো. আক্তারুজ্জামান, মিঞা মো. মিজানুর রহমান গং আত্মসাৎ করেছেন।  

সংবাদ সম্মেলন শেষে সাবেক ও বর্তমানদের কয়েকজন বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় সাবেক কমিটির কয়েকজন জানান, তাদের কাছে এ বিষয়ক বেশ কিছু কাগজপত্র রয়েছে। যা নিয়ে শিগগিরই তারাও গণমাধ্যমের সামনে আসবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২১
এসএমএকে/এসআইএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ