ঢাকা, রবিবার, ৮ আষাঢ় ১৪৩২, ২২ জুন ২০২৫, ২৫ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

‘শীতে এইডাই আমগো ফাইভ স্টার হোটেল’

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:২৪, জানুয়ারি ৭, ২০২১
‘শীতে এইডাই আমগো ফাইভ স্টার হোটেল’

মানিকগঞ্জ: পৌষের শুরু থেকেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ফুটপাতের মৌসুমি খাবারের দোকানের সংখ্যা।

শীতের তীব্রতা যতো বাড়ছে ততোই জেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় টিকা, বট, চিকেন-রোল, নুডুলসের পরসা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে কথা হয় মৌসুমি খাবারের দোকানী সাহেব আলীর (২১) সঙ্গে। মাগুরা জেলার মহাম্মদপুর এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে আসেন তিনি এ জেলায়, ভালো কোনো কাজ না পেয়ে বাধ্য হয়েই ফুটপাতে খাবারের এ ব্যবসা বেছে নেন তিনি। প্রতিদিন বিকেল পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচা-বিক্রি চলে তার দোকানে।

জানা যায়, জেলা শহরের প্রধান বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিকেল পর থেকে আসেন নানা জায়গার মৌসুমি খাবার ব্যবসায়ীরা। একেক জন একেক স্থানে তাদের খাবারের পরসা সাজিয়ে বসছে এবং নানা ধরনের হাক-ডাকে ক্রেতাদের মনযোগ আকর্ষণ করতে চেষ্টা করছেন। নানা বয়সী মানুষ ওই সমস্ত দোকানের সামনে জটলা করছে এবং তারা একেকজন তাদের পছন্দ অনুযায়ী খাবার কিনে খাচ্ছেন আবার অনেকে পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য নিয়েও যাচ্ছেন।

জেলা শহরের প্রাইভেট কোম্পানিতে এক চাকরিজীবী রাকিব আহাম্মেদ নামে এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, অফিস শেষ করে বাড়ি ফেরার জন্য বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসার পর তাদের হাক-ডাকে কাছে গিয়ে দেখি গরম গরম টিকা ভাজছে তা দেখে আর লোভ সামলাতে না পেরে কয়েকটা খেয়ে ফেললাম। খাওয়ার পর বুঝলাম নামি-দামি হোটের চেয়ে অনেকটাই ভালো আর দামটাও কম সব মিলিয়ে বলতে হবে হেব্বি টেস্টি খাবার খেলাম।  

সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে অনার্সে পড়ুয়া ছাত্র সাকিব বাংলানিউজকে বলেন, করোনার জন্য কলেজ বন্ধ। প্রতি বছর আমি এই সময় কোচিং শেষ করে বাসায় ফেরার পথে বন্ধুরা মিলে এই সকল ফুটপাতের দোকানে শীতের সময় বট খেতে আসি। তবে এ বছর করোনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ যে কারণে এ সব খাবার খুব মিস করি। আজ যেহেতু শহরের একটি কাজে এসেছি কারণে এ খাবার আর মিস করেনি।

নিলাচল পরিবহনের সুপারভাইজার আকবর বলেন,  আমারা যারা পরিবহন সেক্টরে কাজ করি তাদের জন্য এই ফুটপাতের খাবার হলো ফাইভ স্টারের নামিদামি খাবার। এখন রাতে হালকা নাস্তার জন্য একটা রোল আর দুই পিচ টিকা খেয়ে নিলাম, ঢাকায় পৌঁছাতে আরো ঘণ্টা খানেক সময় লাগবে আর যদি রাস্তায় যানজট থাকে তরে আরো বেশি সময় লাগতে পারে সেজন্য খেয়ে নিলাম এবং ঢাকায় গিয়ে পৌঁছে রাতের খাবার খাবো।

মানিকগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড এলাকায় ফুটপাতে মৌসুমি দোকানী সাহেব আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমি গত কয়েক মাস হলো এ জেলায় এসেছি কাছে তবে আমার বয়স কম বলে কেউ কোনো কাজ দেয়নি তাই হঠাৎ করে মাথায় এলো শীতের মৌসুমে ফুটপাতে হরেক রমকের খাবারের ব্যবসায় করা যেতে পারে আর সেই থেকে এ ব্যবসা করা। বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ফুটপাতে এ খাবারের দোকান খোলা রাখি এবং বেচা বিক্রিও ভালো। সারা দিনে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা বেচাবিক্রি করতে পারি। এই পরিমাণ টাকা প্রতিদিন বিক্রয় করতে পারলে শ’পাঁচেক টাকা লাভ থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।