ঢাকা, বুধবার, ১১ আষাঢ় ১৪৩২, ২৫ জুন ২০২৫, ২৮ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

‘দেশের প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপদ রাখার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:২৯, জুন ২৫, ২০২৫
‘দেশের প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপদ রাখার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছি’ বক্তব্য দিচ্ছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, ‘সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা’ শুধু একটি কর্মসূচি নয়, এটি একটি জাতীয় অগ্রযাত্রা, যেখানে আমরা দেশের প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপদ রাখার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।  

মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকায় বিএম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ‘সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কীকরণ’ জাতীয় ভ্যালিডেশন ও শেয়ারিং কর্মশালার উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

 

দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে আগাম সতর্কবার্তা শুধুই একটি তথ্য নয়, এটি জীবন রক্ষার অন্যতম উপায়। বাংলাদেশ সফল প্রয়োগও করেছে। ১৯৭০ সালে একরাতে দশ লাখ মানুষের মৃত্যুকে এক অঙ্কে বা শূন্যে নামিয়ে আনতে পেরেছি। আমাদের ‘ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি’ বিশ্বের আদর্শ।

তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নানাবিধ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে আমাদের আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থাকে আধুনিক করার পাশাপাশি বহুমাত্রিক দুর্যোগকে বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তাই আমরা থেমে থাকিনি। আমরা ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সঙ্গে সঙ্গে ভূমিধস, বজ্রপাত, খরা, তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, এমনকি নগরভিত্তিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তাকেও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি।  

দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, ‘সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা’ বাস্তবায়নে সরকার ইতোমধ্যেই নিজস্ব অর্থের সংস্থান করছে। সরকার এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ইতোমধ্যেই এটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছি। তবে এটি সরকারের একার কাজ নয়। সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন হবে। এজন্য আমাদের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহায়তা, মাল্টি-ইয়ার কমিটমেন্ট, রিস্ক পুলিং ও ইনোভেটিভ ফাইন্যান্সিং মডেল।

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তি থাকলেও যদি তা মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারে, তবে তার উপযোগিতা কমে যায়। তাই আমরা জোর দিচ্ছি- কমিউনিটির অংশগ্রহণ, স্বচ্ছ তথ্য প্রবাহ এবং সহজবোধ্য ও স্থানীয় ভাষায় বার্তা ডিজাইন ও বিতরণের ওপর। আমাদের লক্ষ্য শুধু তথ্য সরবরাহ নয়, সেটি বুঝে গ্রহণ করে সাড়াদানের সক্ষমতা গড়ে তোলা।  

দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ সহনশীলতা নিয়ে তার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে ক্রমাগত গুরুত্ব আরোপ, বিনিয়োগ এবং পরিকল্পনার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ‘সবার জন্য আগাম সতর্কতা’ গ্লোবাল উদ্যোগে সম্মিলিতভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, ‘সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা’ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই রোডম্যাপ জাতীয় পরিকল্পনার (যেমন এনপিডিএম, এনএপি) সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তৈরি হয়েছে। আজকের কর্মশালার মাধ্যমে আমরা এই যাত্রাকে আরও গভীর, বাস্তবভিত্তিক ও মানবকেন্দ্রিক করতে চাই। আমরা চাই, সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা শুধু একটি প্রতিশ্রুতি নয়, একটি বাস্তবতা হয়ে উঠুক।  

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানেৱ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিসেস গুইন লুইস, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি হেড পেড্রো মোটোস, সুইডিশ দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মিসেস মারিয়া স্ট্রিডসম্যান এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ, সরকারি ও বেসরকারি অংশীদার বক্তব্য দেন।  

জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।