কয়রা: খুলনার কয়রা উপজেলায় গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) প্রকল্পের সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোনো নিয়ম না মেনে নিম্নমানের ইট ও কাদা মাটি যুক্ত বালু ব্যবহার করে কাজ দায়সারাভাবে শেষ করার পাঁয়তারা চলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে বক্স কেটে ৬ ইঞ্চি সেন্ট ফিলিংয়ের পর কম্পেকশন করে তার ওপর দুই ধাপে ভালো মানের ইট বসানোর কথা। কিন্তু সেখানে বক্স করার পরিবর্তে কোনো রকম সড়কের মাটি সমান করে কাদামাটি যুক্ত বালু দেওয়া হলেও কম্পেকশন করা হয়নি। তার ওপর বসানো হচ্ছে ইট। বসানো ইটগুলোও নিম্নমানের বলে দাবি এলাকাবাসীর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। ফলে সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা।
প্রকল্পের প্রারম্ভিক স্থানে কাজের আগে আবশ্যিকভাবে (৫ ফুট × ৩) ফুট আকারের প্রকল্পের যাবতীয় তথ্য সম্বলিত সাইন বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সেটি দেওয়া হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) তথ্যমতে, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চলতি অর্থ বছরে প্রায় ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে উপজেলার বেদকাশি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বতুল বাজার মজিবর এর ব্রিজ হইতে পশুর তলা আদিবাসী পাড়া অভিমুখে ১০০০ মিটার রাস্তার এইচবিবি করণ কাজটি করছেন জয়নগর দাকোপ এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীরাজ মীরা অ্যান্ড কোং। কাজটি শুরু হয়েছে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি, কাজটি চলতি বছরের ১০ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো শেষ হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান বলেন, নিম্নমানের ইট ও বালি দিয়ে রাস্তা তৈরি করার কাজ ১০ থেকে ১২ দিন আগে শুরু হয়েছে। ইটের বুনন ফাঁকা ফাঁকা। রাস্তায় এক নাম্বার ইট বসানোর কথা থাকলেও, দেওয়া হচ্ছে নাম্বারবিহীন ইট। পিওর বালির পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে মাটিযুক্ত বালি। যে পরিমাণ বালি দেওয়ার কথা, তার থেকে অনেক কম দেওয়া হচ্ছে। এভাবে রাস্তা নির্মাণ করা হলে, তা বেশি দিন টিকবে না।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মাজেদ ও হরিদাস মণ্ডল বলেন, ‘ইটের মান এতটাই খারাপ যে, শতকরা ২০ ভাগ ইটও ভালো না। কাদা মাটি যুক্ত বালু দিচ্ছে তাও ঠিকমতো দিচ্ছে না। বারবার আপত্তি জানালেও কেউ কর্ণপাত করছে না।
কর্মরত শ্রমিকরাও নিম্ন মানের ইট ও কাদা যুক্ত বালু ব্যবহারের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, ‘আমরা যা পাই, তাই দিয়ে কাজ করি। আমাদের করার কিছু নেই। ’
এ বিষয়ে ঠিকাদার মিজানুর রহমান সানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ইটের মান খারাপ না, কিছু লোক অহেতুক অভিযোগ করছে। কাজ সঠিক নিয়মেই হচ্ছে।
তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মামুনর রশিদ জানান, ‘আমি নিজে গিয়ে ঠিকাদারকে সতর্ক করে ভালো মানের ইট ও বালু ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তারপরও যদি অনিয়ম হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরআইএস