ফেনী: ফেনীতে রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের কাছে খাল খনন করে বাংলাদেশে উজানের পানি ঢোকানোর অপচেষ্টা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। খবর পেয়ে স্থানীয় জনগণ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা মিলে প্রতিহত করেন।
জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার পরশুরামের আলোচিত বল্লামুখার বাঁধের পাশে ভারতীয়রা নো ম্যানস ল্যান্ডে খাল খননের চেষ্টা করলে বিজিবি ও স্থানীয়দের বাধায় পিছু হটেছে বিএসএফ ও ভারতীয়রা।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত ১১টার দিকে মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙামাটিয়া গ্রামে বল্লামুখার বেড়িবাঁধ থেকে প্রায় ১০০ গজ উত্তরে এ ঘটনা ঘটে।
পূর্ব রাঙামাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা মমতাজ মিয়া (৬০) জানান, প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে এস্কেভেটর ও যন্ত্রপাতি নিয়ে খাল খননের চেষ্টা করেন ভারতীয়রা। সীমান্তের পিলার থেকে ২০ থেকে ৩০ গজ ভেতরে তারা খনন করার চেষ্টা করেন। আমরা বিজিবির সঙ্গে উপস্থিত থেকে তাদের বাধা দিলে, তারা চলে যায়।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ভারতের সুবিধার্থে সীমান্তে টিলা কেটে পানি বাংলাদেশের ভেতরে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। বিজিবি ও স্থানীয় মানুষ এটি প্রতিরোধ করেছে। আমরা সতর্ক রয়েছি। এ ধরনের কাজ আমরা করতে দেবো না।
বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, নো ম্যানস ল্যান্ডে স্থাপনা তৈরি উভয় দেশের আইনে নিষেধ রয়েছে। তাদের খাল খননের জায়গা নো ম্যানস ল্যান্ড হওয়ায় কাজ বন্ধ রয়েছে। বিজিবি এবং বিএসএফ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ পরশুরামের এ বল্লারমুখ বাঁধ কেটে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ফলে গেল বছরের জুলাই-আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে ফেনীর জনপদ। তারমধ্যে ১৯ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া বন্যার ভয়াবহতা ছাড়িয়ে গেছে অতীতের সব ইতিহাস। ভয়াবহ এ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৯ জন।
এছাড়াও সড়ক যোগাযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মোটরযান, ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রায় প্রত্যেক খাতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে শত কোটি টাকা। বন্যায় গ্রাম ছাড়িয়ে ডুবেছে জেলা শহরও। পানিবন্দি ছিলেন ১০ লাখের বেশি মানুষ। বন্যার্ত মানুষদের উদ্ধার ও সহায়তায় এগিয়ে এসেছিল সারা দেশের হাজারো মানুষ।
এসএইচডি/আরআইএস