ঢাকা: চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গতকাল থাইল্যান্ডে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক হন তিনি।
এরপর ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকার এক হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ঢাকার সিএমএম আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার নথিপত্র থেকে জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন ও অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারশ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন এনামুল হক।
মামলার বিবরণীতে বলা আছে, হত্যাচেষ্টার ঘটনার সময়কাল গত বছরের ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট। এই সময়ে নুসরাত ফারিয়া ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়। তিনি বিদেশ থেকেই ছাত্রদের আন্দোলনের পক্ষে কথা বলেন। সেই সময়ে ফারিয়ার অবস্থান নিশ্চিত হতে যোগাযোগ করা হয় ক্যালগারির অনুষ্ঠান আয়োজকদের সঙ্গে। তাদের ফেসবুক ঘেঁটে পাওয়া যায় বেশ কিছু ছবি।
ফারিয়ার বিদেশ যাত্রা ও ফিরতি টিকিটের ছবি পেয়েছে কালের কণ্ঠ। টিকিটে দেখা যায়, এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে নুসরাত ফারিয়া ঢাকা থেকে উড়াল দেন ৯ জুলাই। সেদিন দুবাই পৌঁছান তিনি। দুবাই থেকে ১০ জুলাই কানাডার টরন্টোর উদ্দেশে যান।
১২ আগস্ট টরন্টো থেকে উড়াল দেন, আবার ১৩ আগস্ট দুবাই পৌঁছান। ট্রানজিট শেষে পরদিন অর্থাৎ ১৪ আগস্ট তিনি ঢাকায় আসেন। এ সময়ে তিনি কানাডার বিভিন্ন রাজ্যে কনসার্টে ব্যস্ত ছিলেন। ফাঁকে ফাঁকে দেশের খবরও রাখছিলেন। একইসঙ্গে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতিও সংহতি জানাচ্ছিলেন।
তার ফেসবুক থেকে জানা যায়, তিনি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি আয়োজনে অংশ নেন। যার হালনাগাদ তার সামাজিক মাধ্যমেও পাওয়া যায়।
১৮ জুলাই রাত পৌনে ৯টার পর থেকে দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে ১৭ জুলাই মধ্যরাত থেকে সরকার ফোর-জি নেটওয়ার্ক বন্ধ করায় দেশের মোবাইল ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ হয়ে যায়। ব্রডব্যান্ড সংযোগ ২৩ জুলাই চালু হলেও মোবাইল ইন্টারনেট তখনও চালু হয়নি। সে সময়টাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ফেসবুকে সক্রিয় ছিলেন ফারিয়া।
১৯ জুলাই ফেসবুকে লেখেন, ‘২ দিন হয়ে গেল, বাংলাদেশে ইন্টারনেট নেই। দেশটি বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন। আমরা কি সত্যিই আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি না? এটা এত কঠিন কেন? খুব অসহায় বোধ করছি। ’
এরপর ২৩ জুলাই ফেসবুকে লেখেন, ‘৬ দিন হয়ে গেল আমার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলিনি। আপনারা সবাই জানেন আমার বাবার অবস্থা তেমন ভালো না। কিন্তু আমি আমার সহকর্মী ছাত্র ভাই এবং বোনের জন্য অনুভব করি। সবার সুস্থতা ও দেশের শান্তি কামনা করছি। ’
সূত্র: কালের কণ্ঠ