ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের হাত ভেঙে দিল কিশোর গ্যাং

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৫ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২৪
ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকের হাত ভেঙে দিল কিশোর গ্যাং হামলাকারীরা।

নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে মাদরাসার শ্রেণি কক্ষে ঢুকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে পিটিয়ে দুই হাত ভেঙে দিয়েছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা।  

ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. হাসান (৩৪) উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক।

 

রোববার (৫ মে) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে।  

এর আগে একই দিন বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনা ঘটে।  

হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য মো. রাজু (২৪) ও আবু নোমান (২৫) মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা এলাকার বাসিন্দা।  

জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক মো. শহীদ উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, বেলা ১১টার দিকে বহিরাগত বখাটে কিশোর গ্যাং রাজু জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ক্যাম্পাসে আসে। এরপর সে মাদরাসার ছাত্র নোমানের সহযোগিতায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে। ওই সময় ছাত্রীটি তাদের ভয়ে শ্রেণীকক্ষের ব্রেঞ্চের নিচে লুকিয়ে পড়ে। এরপর ওই ছাত্রীর অন্য সহপাঠীরা বাধা দিলেও রাজু তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে।

খবর পেয়ে মাদরাসার নূরানী বিভাগের শিক্ষক মো. সোহেল এগিয়ে গেলে উত্ত্যক্তকারী রাজু ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মাদরাসার ভেতরে ওই শিক্ষককে মারধর করে। তাৎক্ষণিক একই মাদরাসার শিক্ষক হাসান এগিয়ে এসে সহকর্মী শিক্ষকের ওপর হামলা ও ছাত্রীকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গে উত্ত্যক্তকারীদের বিরোধ দেখা দেয়।  

ওই বিরোধের জেরে বিকেল ৫টার দিকে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রাজু ও নোমানের নেতৃত্বে ৭/৮জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য তার গতিরোধ করে। পরে তারা শিক্ষক হাসানের ওপর হামলা চালায়। তখন হামলাকারীরা তাকে রাস্তায় দৌড়াতে দৌড়াতে বেধড়ক পেটায়। এতে তার দুই হাত ভেঙে যায়।    

হামলার শিকার শিক্ষকের শাশুড়ি বিবি খাদিজা ও শ্বশুর মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং সদস্যরা এ হামলা চালায়। বর্তমানে হাসানকে জেলা শহর মাইজদীর জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের অর্থোপেডিক ডাক্তার আবদুর রহমান বলেন, তার একটি হাতে অপারেশন করে পাত বসানো হয়েছে। অন্য একটি হাতে প্লাস্টার করা হয়েছে। তার দুইটি হাতই ভেঙে গেছে।  

জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনার কথা শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবারকে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।