ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দেবহাটায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, স্বামী আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৪
দেবহাটায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা, স্বামী আটক

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার দেবহাটায় সাইমা খাতুন (১৮) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার স্বামী তানজিন ইসলামকে (২৪) আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার ও তার স্বামীকে আটক করে পুলিশ।

তানজিন ইসলাম দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গ্রামের আব্দুস সবুরের ছেলে। এছাড়া নিহত সাইমা খাতুনের বাবার বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়ার মৌখালি গ্রামে।  

জানা গেছে, শ্বশুর আব্দুস সবুর পরিচালিত পারুলিয়া জামিয়া ইসলামিয়া ফয়জুল উলুম মহিলা মাদরাসায় পড়াশুনাকালীন ৬-৭ মাস আগে পারিবারিকভাবে সাইমা ও তানজিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরও সাইমা খাতুন পড়াশুনা অব্যাহত রেখেছিলেন। তিনি মাত্র ৮ মাসে কোরআন শরীফ মুখস্থ করে কোরআনে হাফেজ হয়েছিলেন বলে দাবি স্বজনদের।  

সাইমার মা রাবেয়া খাতুন জানান, রাত ১২টার দিকে মেয়ে সাইমা খাতুন গুরুতর অসুস্থ উল্লেখ করে বেয়াই আব্দুস সবুর তাদের ফোন করেন। ঘণ্টাখানেক পর তারা মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে সাইমাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। হঠাৎ অসুস্থতার কারণে সাইমার মৃত্যু হয়েছে বলে সেসময় তাদের জানান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জামাতা তানজিন তার মেয়েকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানতে পারেন তারা। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তিনি।

এদিকে রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়রা ৯৯৯-এ ফোন দিলে রাত দেড়টার দিকে দেবহাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাইমার মরদেহ উদ্ধারসহ তার স্বামী তানজিনকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি ওই রাতে সাইমা ও তানজিনের বাড়িতে অবস্থানরত জিন-ভুতের ঝাড়ফুঁক করা আব্দুস সেলিম নামে এক গুনিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।

সাইমার শ্বশুর আব্দুস সবুর জানান, জিনের আছর থাকায় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন তার ছেলে তানজিন ইসলাম। মাসে দু-একবার উন্মাদ হয়ে উঠতো সে। তখন গুনিন দিয়ে ঝাড়ফুঁক করলে আবার স্বাভাবিক হয়ে যেত তানজিন। শুক্রবার দুপুরে তানজিন আবারও উন্মাদ হয়ে উঠলে ঝাড়ফুঁকের জন্য আশাশুনি থেকে গুনিন আব্দুস সেলিমকে বাড়িতে ডাকেন তিনি। স্বাভাবিক হওয়ার পর রাতের খাবার খেলে ছেলে তানজিন ও পুত্রবধূ সাইমা একত্রে ঘুমাতে গিয়েছিল। আর গুনিন আব্দুস সালামকেও রাতে ওই বাড়িতে রাখা হয়েছিল। রাত ১২টার দিকে ছেলে তানজিনের ডাকে ঘুম থেকে উঠে পুত্রবধূ সাইমাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান তারা। পরে পুত্রবধূ সাইমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বেয়াইয়ের বাড়িতে ফোন করেন।

দেবহাটা থানার ওসি শেখ মাহমুদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে স্ত্রী সাইমা খাতুনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে তানজিন। সাইমার গলা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সাইমার মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।