ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১৫ লাখ টাকার ‘চৌধুরী’ ৫ লাখেও বিক্রি হলো না

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৩
১৫ লাখ টাকার ‘চৌধুরী’ ৫ লাখেও বিক্রি হলো না

নীলফামারী: খামারির অনেক আশা ছিল ‘চৌধুরী’ নামের হৃষ্টপুষ্ট ষাঁড়টি বিক্রি হবে ১৫ লাখ টাকায়। সে অনুযায়ী দামও হাঁকা হয়েছিল।

কিন্তু সে আশা অপূর্ণই থেকে গেল তার।  
‘চৌধুরীকে’ পাঁচ লাখ টাকায় কিনে নিলেন এমন প্রস্তাবে এক লাখ টাকার বায়নাও মিলেছিল। কিন্তু না। ‘চৌধুরী’ বিক্রি হলো না। বিশালদেহী হলিস্টিক ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি অবিক্রিত অবস্থায় খামারেই থেকে যায়।

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ি মহল্লায় ইউসুফ হৃষ্টপুষ্ট খামার ও ডেইরি ফার্মের অবস্থান। খামারটির মালিক একজন তরুণ উদ্যোক্তা। নাম তার জামিল আশরাফ মিন্টু। মিন্টুর খামারে অনেক গরু থাকলেও চৌধুরী নামের গরুটির প্রতি ছিল তার আলাদা ধরনের দৃষ্টি। চৌধুরীর বয়স এখন তিন বছর। স্কেলে এর ওজন ১১৬০ কেজি। আদর করে গরুটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘চৌধুরী’। কেননা গরুটির চালচলন ছিল চৌধুরীর মতোই।

খামার মালিক জামিল আশরাফ মিন্টু বলেন, গেল কোরবানি ঈদে আমার খামার থেকে আড়াইশো গরু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৫৩টি। ৬০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা দামে এক একেটি গরু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ছিল দেশি জাতের গরু। কিছু ছিল শংকর ও শাহিওয়াল জাতের। গরু অবিক্রিত থাকায় আমরা ক্ষতির শিকার হয়েছি।  

জামিল বলেন, এবারই প্রথম একটি বড় গরু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ‘চৌধুরী’ নামেও এই গরুটিকে সন্তান স্নেহে বড় করেছি।  

তিনি বলেন, একটা গরু পালনে এখন খরচ বেড়েছে অনেক। দ্বিগুণেরও বেশি। গোখাদ্য, ডালের মিশ্রণ, আগে ডাল ছিল ২৫ টাকা যা এখন কিনতে হয় ৫৫ টাকায়। ৬ টাকা কেজি আলুর এখন ২৫ টাকা। চালের খুদির দাম ছিল আগে ৪২ টাকা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা। এছাড়াও ভালো জাতের গরু পালনে প্রয়োজন পড়ে বিদ্যুতের। গরুর মাথার ওপর সারাক্ষণ ফ্যান চলতে থাকে। সেই বিদ্যুতের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। সবমিলিয়ে গত তিন বছরে ‘চৌধুরীর’ পেছনে খরচ হয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা।

আশা করেছিলাম কোরবানিতে ওই গরুর দাম ১৫ লাখ টাকা পাবো। একজন কসাই অবশ্য ১০ লাখে গরুটি কিনে নিতে চেয়েছিলেন। আমি চেয়েছিলাম ‘চৌধুরী’ একজন কোরবানিদাতার বাড়িতে যাক। এজন্য অপেক্ষা করেছি। ঈদের দুই দিন আগে জাবেদুল হক নামে একজন পরিবহন ব্যবসায়ী গরুটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় কিনতে চান। আমি এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে এক লাখ টাকা বায়নাও দিয়েছিলেন। পরে তিনি আর গরুটি নিয়ে যাননি।

জামিল বলেন, চৌধুরীকে আমি সন্তানের মতোই লালন-পালন করেছি। আমি তার কাছে গেলেই অনেক আদর করে সে। দাঁত দেখাতে বললেই হাঁ করে তা দেখায় ‘চৌধুরী’। বিক্রি হয়নি ‘চৌধুরী’। গরুটি আমার খামারেই আছে। আদর স্নেহ করছি। অনেক গরুও অবিক্রিত আছে। সব মিলিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির শিকারই হয়েছি। আগামী কোরবানি ঈদে নতুন করে ভাববো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।