ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশ এখন জঙ্গিবাদে নিম্ন ঝুঁকির দেশ: এটিইউ প্রধান 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
বাংলাদেশ এখন জঙ্গিবাদে নিম্ন ঝুঁকির দেশ: এটিইউ প্রধান 

ঢাকা: বৈশ্বিক রেটিংয়ে বাংলাদেশ এখন জঙ্গিবাদে নিম্ন ঝুঁকির দেশ বলে জানিয়েছেন জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে গড়ে তোলা পুলিশের বিশেষায়িত অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এস এম রুহুল আমিন।

বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে এটিইউ ও জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউএনওডিসি এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘কাউন্টারিং টেররিজম অ্যান্ড ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম থ্রো স্ট্রেংদেনিং অব কমিউনিটি অ্যান্ড বিট পুলিশিং মেকানিজম অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জাতীয় জাতীয় কনসালটেশন কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

এটিইউ প্রধান বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বিট ও কমিউনিটি পুলিশিং। বাংলাদেশ একটা সময় জঙ্গিবাদের বৈশ্বিক ইনডেক্সে হাইরিস্কের দেশ ছিল। সেখান থেকে আমরা এখন লো রিস্কের দেশে পরিণত হয়েছি। তবে জঙ্গিবাদের বিষয়ে সন্তুষ্টির সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ সংক্রান্তে অস্ট্রেলিয়ার ইন্সটিটিউট অব পিস অ্যান্ড জাস্টিস নামে একটি প্রতিষ্ঠান জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের দিক থেকে পাঁচটি ক্যাটাগরি করে থাকে। ভেরি হাইরিস্ক ক্যাটাগরি, হাইরিস্ক ক্যাটাগরি, মিডিয়াম রিস্ক ক্যাটাগরি, রিস্ক ক্যাটাগরি ও লো রিস্ক ক্যাটাগরি।

২০১৬-১৭ সালে আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তখন আমরা হাই রিস্ক ক্যাটাগরিতে ছিলাম। ২০১৬ সালে আমাদের অবস্থান ছিল ২২তম। ২০১৭ সালে ছিলাম ২১তম। অর্থাৎ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশের একটি ছিলাম। এরপর থেকে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগের ফলে আমাদের গ্লোবাল ইনডেক্সে উন্নতি ঘটে।

ধীরে ধীরে আমরা হাই রিস্ক থেকে মিডিয়াম রিস্কে এবং সর্বশেষ এ বছর আমরা লো রিস্ক ক্যাটাগরিতে জায়গা পেয়েছি। আমাদের অবস্থান এখন ৪৩তম। উপমহাদেশে আমাদের নিচে রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান। এমনকি ভারতও রয়েছে আমাদের নিচে, তাদের অবস্থান ১৩তম।

উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জামানি ও যুক্তরাজ্যও আছে আমাদের চেয়ে বেশি রিস্কে। চারটি দেশই রয়েছে মিডিয়াম রিস্কে। আমরা ভালো কিছু করতে পেরেছি, যা বিশ্বের অনেক দেশের কাছে ঈর্ষণীয়।

এটিইউ প্রধান বলেন, ২০১৩ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী লেখকদের ওপর হামলা শুরু করে, সঙ্গে যোগ দেয় নিউ জেএমবি। ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলা ছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেন।

২০১৯ সালে এটিইউ কার্যক্রম শুরু করে একটি বিধিমালা প্রনয়নের মাধ্যমে। প্রথম মাত্র ৬০০ জনবলে এটিইউর যাত্রা শুরু। এরপর কোভিড মহামারি এরপর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু। সারাদেশেই অর্থনৈতিক কৃচ্ছ্রতা সাধন নীতি গ্রহণ করা হয়, যে কারণে এটিইউ আর সম্প্রসারণে যেতে পারেনি।

সীমিত অবস্থানে থেকেও দেড় শতাধিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩০০ জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছে এটিইউ। এ ছাড়া, অনেক সাজাপ্রাপ্ত, যুদ্ধাপরাধীসহ সেনসেশনাল মামলার আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধর সফট ও হার্ড অ্যাপ্রোচের আলোকে কাজ করছে এটিইউ।

তিনি আরও বলেন, বিট পুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে অনেক বেশি কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব। কীভাবে জঙ্গিকে সনাক্ত করা যায়, শিক্ষকদের দায়িত্ব কি, ছেলে-মেয়েদের চলাফেরায় কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, তা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব। বিট ও কমিউনিটি পুলিশিং এর কার্যক্রমকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে জঙ্গিবাদ দমন করা যায়, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কানাডিয়ান হাইকমিশনের পলিটিক্যাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের প্রতিনিধি ব্রাডলি কোর্টস বলেন, কানাডাতেও বিট পুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিং রয়েছে। বাংলাদেশে উগ্রবাদ জঙ্গিবাদোর বিরুদ্ধে বিট পুলিশিং খুবই আশাব্যঞ্জক ফল বয়ে এনেছে।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন এটিইউর ডিআইজি (অ্যাডমিন) মফিজ উদ্দিন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আশরাফ, ঢাকার ইউএনওডিসির অফিসার ইনচার্জ শাহ মোহাম্মদ নাহিয়ান, এটিইউর ডিআইজি (অপারেশনস) মনিরুজ্জামান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০২৩
পিএম/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।