ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘আধুনিক প্রযুক্তি-প্রশিক্ষণে ৯৫ শতাংশ কেস নিষ্পত্তি করছে পুলিশ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
‘আধুনিক প্রযুক্তি-প্রশিক্ষণে ৯৫ শতাংশ কেস নিষ্পত্তি করছে পুলিশ’

ঢাকা: পুলিশ এখন ৯৫ শতাংশ আনডিটেক্টেড কেস নিষ্পত্তি করছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, আগে কোনো মামলা তদন্ত করতে হলে সোর্সের ওপর নির্ভর করতে হতো।

কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, তদন্ত সংক্রান্ত আধুনিক প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন আধুনিক সরঞ্জামাদির সংযোজন ও জনবল বাড়ানোসহ সব কিছু মিলে তদন্তে আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছি। এখন ৯৫ শতাংশ আনডিটেক্টেড কেস নিষ্পত্তি করছে বাংলাদেশ পুলিশ।

বুধবার (৩১ মে) দুপুর ১২টায় পুলিশ সদর দপ্তরের হল অব প্রাইডে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি।

আইজিপি বলেন, পুলিশের সঙ্গে অপরাধ বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন ক্র্যাবের সঙ্গে একটি ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পরস্পর আমরা অনেক কাজও করি। নির্বাচনী ডিউটিতে পাশাপাশি কাজ করে থাকি। দায়িত্বের চেয়ে তাই পারস্পারিক প্রত্যাশাটাও আমাদের বেশি।

তিনি বলেন, বর্তমানে পুলিশের সোর্স অব ইনফরমেশন হলো সাংবাদিক, আর সাংবাদিকদের পুলিশ। তাই পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে যোগাযোগটা বেশি দরকার। যোগাযোগ বেশি হলে পেশাগত দায়িত্ব পালন সহজ হয়। একটা মামলা হলে যতো কিছুই বলি না কেন সেটা পুলিশকে তদন্ত করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বলি সাংবাদিকরা এই নিউজ, ওই নিউজ না করলেও পারতো। আমি মনে করি, সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেয়া উচিত না। কারণ তাদেরও তো এক্সসেপশনাল নিউজ প্রকাশ বা দেখাতে হয়। সাংবাদিক ও পুলিশের উদ্দেশ্যই হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম দূর করা। সেজন্য আমাদের পারস্পারিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বেশি দরকার।

ক্র্যাব নেতাদের কাছে সার্বিক সহযোগিতার প্রত্যাশা রেখে আইজিপি বলেন, অনেক জায়গায় অনেক গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব থাকে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে তা পছন্দ করি না। ঢাকার বাইরে কাজের সময় কখনো আমার প্রেসের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হয়নি। সাংবাদিক বন্ধুদের সার্বিক সহযোগিতা ও আস্থা আমি অর্জন করেছি।

ক্রাইম রিপোর্টারদের জন্য পুলিশের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ক্র্যাব কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। সাংবাদিকদের কারণেই আজকে পুলিশের ভালো দিকগুলো প্রকাশ পাচ্ছে, বাড়ছে পুলিশ প্রীতি। সম্প্রীতির যেন বন্ধন সেটা জনগণের সঙ্গে আরও সুদৃঢ় হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে সাংবাদিকরা রিপোর্টিং করে থাকেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও বাংলার সাংবাদিকরা কলম দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। আমাদের সে পথ ধরেই বর্তমান সাংবাদিকরা এগিয়ে যাচ্ছেন। আগামী দিনেও উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।

আমরা দক্ষ জনবল গড়ে তুলছি। প্রযুক্তিগত সহায়তার কারণে পুলিশের তদন্তে এসেছে আমূল পরিবর্তন। তেমনি আগের মতো আর সাংবাদিকদের জীর্ণশীর্ণ অবস্থা নেই। পেশাগত মানের উন্নতি যেমন ঘটেছে, তেমনি টিনসেড ভবন থেকে বহুতল ভবন হয়েছে সাংবাদিকদের কার্যালয়গুলো। আগে কোথাও একটি ফ্যাক্সের দোকান খোলা পাওয়া যায় কিনা খুঁজে বেড়িছেন সাংবাদিকরা। এখন কিন্ত সব হাতের মুঠোয়।

আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন সেদিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আর্থ-সামাজিক উন্নতি ঘটেছে।  এর সুফল আমরা সবাই ভোগ করছি। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। দুর্বার গতিতে এ দেশ এগিয়ে চলেছে। সেই উন্নয়নের সারথি হয়ে পুলিশ সাংবাদিকসহ সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল বলেন, কাজের ধরন ও বাস্তবতার প্রেক্ষিত থেকেই পুলিশের সঙ্গে বেশি যোগাযোগ রাখতে হয় ক্রাইম রিপোর্টারদের। পুলিশও ক্রাইম রিপোর্টারদের বন্ধু মনে করেন। ক্র্যাবের সিনিয়র সদস্যের সঙ্গে আপনাদের ভালো সম্পর্ক ছিল।

বাংলাদেশে ক্রাইম রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে ক্র্যাব পেশাগত মানোন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। অনেক কল্যাণমূলক ও প্রশিক্ষণের কর্মসূচি পালন করে থাকি। এবার আমরা ক্রাইম রিপোর্টারদের এক মাত্র সংগঠন ক্র্যাবের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করবো। এ উপলক্ষে সার্বিক সহযোগিতা ও ক্র্যাব-আইজিপি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড চালুর অনুরোধ জানান তিনি।

ক্র্যাব কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক মামুনূর রশীদ বলেন, প্রেসক্লাবের পর বাংলাদেশে প্রথম কোনো বিটভিত্তিক সংগঠন হচ্ছে ক্র্যাব। মূলধারার গণমাধ্যমের ক্রাইম রিপোর্টাররাই এর সদস্য। আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছরে পুলিশের যে বিবর্তন তাতে রয়েছে ক্রাইম রিপোর্টারদের অবদান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত আইজিপি মো. কামরুল আহসান, মো. মাজহারুল ইসলাম, জামিল আহমেদ, মো. আতিকুল ইসলাম, আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক, ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবির, এআইজি মনজুর হোসেন ও উপ প্রধান তথ্য কর্মকর্তা একেএম কামরুল আহছান।

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মাসুম মিজান, অর্থ সম্পাদক এমদাদুল হক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এসএম ফয়েজ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জাফর আহমেদ, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, কল্যাণ সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন, জসীম উদ্দীন মাহির  ও এনামুল কবীর রুপম।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।