ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ভাতিজাকে কাউন্সিলর বানাতেই আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়: রাজীব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
ভাতিজাকে কাউন্সিলর বানাতেই আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়: রাজীব ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার ভাই জোসেফ-হারিস-আনিসের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ভাতিজাকে কাউন্সিলর বানাতে পরিকল্পিতভাবে তাকে গ্রেপ্তার করানো হয় বলে অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব। একইসঙ্গে এ বিশেষ মহলের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (২৮ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ও ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

সাবেক কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেকুজ্জামান রাজীব বলেন, খুব অল্প বয়সেই আমি সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবরে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়। একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তার সন্ত্রাসী ভাই তোফায়েল আহমেদ জোসেফ, হারিস আহমেদ ও আনিস আহমেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যই এটা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাকে গ্রেপ্তারের পর রাতভর আমার বাসা ও অফিসে তল্লাশি অভিযান চলেছিল। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের মতো করে সন্ধান করেছে। তবে অভিযান শেষে অভিযান পরিচালনাকারী দল গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল, আমার কোনো ক্যাসিনো সম্পৃক্ততা নেই। অথচ সেই অভিযান ছিল ‘ক্যাসিনো অভিযান’।

তার নামে আনা অঢেল সম্পদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে রাজীব বলেন, এমনকি বিদেশে আমার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য-প্রমাণও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের তদন্তে পায়নি।

সাবেক এ কাউন্সিলর বলেন, ৯০ দশক থেকে জোসেফ-হারিস পরিবার ঢাকা শহরের সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। তবে তারা রাজনৈতিকভাবে আত্মপ্রকাশ করতে চান। মোহাম্মদপুর তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পুরোনো অভয়ারণ্য। সেই এলাকার একজন কাউন্সিলর ছিলাম আমি।

আমার জায়গায় তাদের ভাতিজা আসিফ আহমেদকে কাউন্সিলর বানাতে পরিকল্পিতভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করানো হয়েছিল। ২০১৯ সালে আমাকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত আমার নামে একটা মামলা কিংবা জিডি পর্যন্ত ছিল না। কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও শুধু ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর প্রভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বিনা অপরাধে তিন বছরের বেশি সময় জেলে থাকতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার জীবন থেকে তিনটি বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার ওই সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর হুমকির মুখে আছি। আমার প্রাণনাশের শঙ্কা রয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনায় জড়িত বিশেষ মহলের দ্রুত গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

গ্রেপ্তারের সময় যেসব অভিযোগ উঠেছিল সেসবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ আমি আপনাদের সামনে কথা বলতে এসেছি। কারো সৎ সাহস না থাকলে কোনো ব্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে না।

সেই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা বিজ্ঞ মানুষ, আপনারা কথাগুলো বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমরা দুজন কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় তারা আমাদের জীবনের গতি পাল্টে দিয়েছে। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তার নাম প্রকাশ করতে পারছি না।

আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা শঙ্কা রয়েছে। আপনাদের মাধ্যমে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

মোহাম্মদপুর এলাকায় আরও কাউন্সিলর রয়েছে, তাহলে শুধু আপনাদের দুজনকেই কেন টার্গেট করা হলো, জানতে চাইলে রাজীব বলেন, আপনারা জানেন তাদের ভাতিজা আসিফ, যিনি ইতোপূর্বে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আমার নির্বাচিত এলাকায় তাকে কাউন্সিলর বানাতেই আমাকে টার্গেট করা হয়। ৯০ দশক থেকেই তাদের ওই এলাকায় বেশি জমিজমা, যেখানে তাদের পুরোনো আবাস রয়েছে। আমাকে নির্মূল করতেই মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৩
পিএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।