ঢাকা: পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ ও ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফতের ফ্ল্যাট-প্লটসহ বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২০ মে) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
চৌধুরী নাফিজ সরাফতের জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে আছে রাজধানীর গুলশানের ৩৪ নম্বর রোডে ৩০৮৮ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার ১৩৭০ বর্গফুটের একটি, ১৪২০ বর্গফুটের একটি, ১৪৭০ বর্গফুটের একটি, ১৭০০ বর্গফুটের একটি, ভাটারা এলাকায় ১৫০২ বর্গফুটের একটি নিকুঞ্জ এলাকায় ২১৬০ বর্গফুটের দুটি ও নিকুঞ্জ উত্তর আবাসিক এলাকার ১৪৯৬ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট।
এ ছাড়া বাড্ডার কাঠালদিয়া এলাকার এক দশমিক ২৫ কাঠার জমি, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১০ কাঠা করে দুটি নাল জমি, গাজীপুর সদরে আট দশমিক ২৫ শতাংশ চালা জমির অর্ধেক, নিকুঞ্জ এলাকার চার দশমিক ৯৫ শতাংশের প্লট, পূর্বাচলে সাত দশমিক ৫০ কাঠার প্লট, গুলশান-২ এলাকার ২০ তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি এবং নিকুঞ্জ এলাকার একটি বাড়ি।
আঞ্জুমান আরা শহিদের জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে আছে পান্তপথ চন্দ্রশিলা সুবাস্তু টাওয়ারে ১৯৮ দশমিক ৪২ বর্গমিটারের একটি ফ্ল্যাট, গুলশান লিংক রোডের ৪৩০ বর্গমিটারের ফ্ল্যাট, মিরপুর ডিওএইচএসের ২১২২ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, বারিধারার একটি ফ্ল্যাট ও ভাটারা এলাকায় ১৫০২ বর্গফুটের ফ্ল্যাটের অর্ধেক।
এ ছাড়া নিকুঞ্জ আবাসিক এলকার তিন কাঠার প্লট, বাড্ডার কাঠালদিয়া মৌজার এক দশমিক ২৫ শতাংশ নাল জমি ও গাজীপুর সদরবাড়ি মৌজার আট দশমিক ২৫ শতাংশ চালা জমির অর্ধেক।
চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফাতের জব্দ হওয়া সম্পত্তির মধ্যে আছে বনানীতে তিনটি ও বারিধারায় চারটি ফ্ল্যাট।
এদিন তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে চলমান অনুসন্ধান টিমের প্রধান দুদকের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান এ আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, পদ্মা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সারাফত ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সাথে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ অর্থ-আত্মসাতসহ মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের ওপর অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান।
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, চৌধুরী নাফিজ সরাফত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহিদ এবং তার ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সরাফতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে এবং উল্লিখিত ব্যক্তিরা পলাতক রয়েছেন। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তিগুলো মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ তথা দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত/বৈধ আয় বহির্ভুতভাবে অর্জন করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর সাথে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ব্যক্তিরা নিম্নবর্ণিত স্থাবর সম্পত্তি অনাত্র হস্তান্তর, স্থানান্তার, বন্ধক বা বেহাত করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।
বর্তমানে অভিযোগটির সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিম্নোক্ত স্থাবর সম্পত্তিগুলো অবিলম্বে ক্রোককরণ আবশ্যক।
কেআই/এএটি