ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ফারহান হত্যা: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪
ফারহান হত্যা: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র  ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ফারহান ফাইয়াজকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী, পুলিশ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৫৪ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন কার্যালয়ে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

গত ১৮ জুলাই নিহত ওই ছাত্রের বাবা শহীদুল ইসলাম ভূইয়া মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) আবেদনটি করেন।

এ সময় ফারহানের মা ও বোন উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই রাজধানী ধানমন্ডি এলাকায় সকাল থেকেই ২৭ নম্বর এলাকায় রাপা প্লাজার সামনে মূল সড়কের কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। যেখানে ধানমন্ডি এলাকার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ফারহান ফাইয়াজও অংশ নেন। সকাল থেকেই কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। দফায় দফায় সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই সংঘর্ষে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের এইচএসসি ২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ফারহান ফাইয়াজ দুপুরে গুলিবিদ্ধ হন। ফারহানের বন্ধুরা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে লালমাটিয়ায় অবস্থিত সিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ২৩ থেকে ৫৪ ক্রমিক নম্বর আসামিরা ১৮ জুলাই দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সরাসরি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন এবং গুলিবর্ষণ করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ফারহান ফাইয়াজ সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

এ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ দেওয়া হলো।

অপরাধের ধরনে যা বলা হয়েছে
আসামিদের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দ্যেশ্যে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে সাধারণ নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা, নির্যাতন, আটক, গুম করার অংশ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী মোহাম্মদ ফারহানুল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে ফারহান ফাইয়াজকে গুলি করে হত্যা করার মাধ্যমে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করার অভিযোগ।

যাদের আসামি করা হয়েছে
আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র‌্যাবের সাবেক ডিজি হারুন অর রশীদ, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, মোহাম্মদপুর জোনের তৎকালীন ডিসি এইচ এম আজিমুল হক, এডিসি রওশানুল হক সৈকত, মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন, এসআই শাহরীয়া আলম, ওসি মাহফুজুল হক ভূইয়া, ধানমন্ডি থানার ওসি, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সেক্রেটারি, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সেক্রেটারি, জহির উদ্দিন আহমেদ ওরফে বিচ্ছু জালালসহ ৫৪ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।