ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

ইসলাম

আলবেনিয়ার মুসলমানরা এগিয়ে যাচ্ছে

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৬
আলবেনিয়ার মুসলমানরা এগিয়ে যাচ্ছে আলবেনিয়ার সাকোদার নগরীতে অবস্থিত লিড মসজিদ

আলবেনিয়া ইউরোপে অবস্থিত মাত্র ১১ হাজার বর্গমাইলের ছোট্ট একটি দেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করলে পাঁচ ভাগের একভাগ।

দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ৩০ লাখ। এর মধ্যে চাকরির সুবাদে প্রায় ৫ লাখ মানুষ বিভিন্ন দেশে বসবাস করেন। আলবেনিয়ার বেশিরভাগ এলাকাই পার্বত্যভূমি। অবশিষ্ট সমভূমির খুব অল্প অংশই কৃষিকাজের উপযোগী। দেশটি জাতিসংঘ, ন্যাটো, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্সের (ওআইসি) সদস্য। রাজধানীর নাম তিরানা এবং এটিই দেশের সবচেয়ে বড় শহর।

১১২৭ সাল থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত আলবেনিয়ায় মুসলমানদের অবস্থা বেশ পাকাপোক্তই ছিল। কিন্তু ১৯৬৭ সালে কমিউনিজমের শাসন শুরু হলে প্রচুর ধর্মীয় উপাসনালয় ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তখন ধ্বংসযজ্ঞ থেকে মাত্র কয়েকটি মসজিদ রক্ষা পেয়েছিলো- গুদাম, ওয়ারহাউজ ও পরিত্যক্ত ঘর হিসেবে।

১৯৯০ সালে কমিউনিজমের পতনের পর মুসলমানরা আবার প্রকাশ্যে ধর্মকর্ম চর্চা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ বছরে সারা দেশটিতে ৭শ’ মসজিদ ও দশটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব মাদরাসায় অধ্যয়নরত ছাত্রসংখ্যা ৫ হাজারের মতো।

এ সব মসজিদ ও মাদরাসা মুসলিম কমিউনিটি অব আলবেনিয়া পরিচালনা করে থাকে। এতে সরকারি তরফ থেকে ২৫ শতাংশ অনুদান দেওয়া হয়। ২৫ শতাংশ আসে অনুদান থেকে আর বাকি ৫০ শতাংশ পরিচালিত হয় সংগঠনের নিজস্ব ফান্ড থেকে।

দ্য মুসলিম কমিউনিটি অব আলবেনিয়া বেশ পুরনো একটি সংগঠন। কমিউনিস্ট শাসনামলে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৯০ সালে কমিউনিস্ট সরকারের পতনের পর তারা পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এ সংগঠনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন- মুফতি সিকান্দর ব্রেবসিক।

দীর্ঘ ২৩ বছরের কমিউনিস্ট শাসনের ফলে মুসলমানদের বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক হয়ে যায়। মুসলমানদের সংখ্যা এখন প্রায় ৬৫ শতাংশ। কিন্তু প্রাকটিসিং অর্থাৎ নিজেদের জীবনে ইসলামের নিয়মকানুন মেনে চলেন এমন মুসলমানের সংখ্যা ৫ শতাংশেরও কম।

ফলে মুসলমানেরা হালাল-হারামের তেমন তোয়াক্কা করেন না। নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরা ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতোই। হিজাবের প্রচলন একেবারেই কম। মরক্কো ও বসনিয়ার মতো এ দেশে অনেক দাড়িবিহীন আধুনিক হাফেজ, মুফতি ও মসজিদের ইমামের সাক্ষাৎ আপনাকে বিস্মিতও করতে পারে।

এসব দেশে মসজিদের মেহরাবের কাছাকাছি একটি রুমে নামাজ পড়ার জন্য এক বিশেষ ধরনের জোব্বা ও টুপি থাকে। শার্ট-ট্রাউজার পরিহিত ইমাম মসজিদে এসে প্রথমে ওই রুমে ঢুকেন। পরনের শার্ট ও ট্রাউজারের ওপর জোব্বাটি পরে নেন। তারপর ইমামতি করেন।

তবে দিন পাল্টাচ্ছে। ধীরে ধীরে মুসলমানদের প্রভাব বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় রাজধানী তিরানায় পার্লামেন্টের পাশে একটি বিশাল মসজিদ নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি হবে বলকান অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মসজিদ। মসজিদটি নির্মাণে ‘ওসমানীয়’ নির্মাণশৈলী অনুসরণ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বলা চলে, মুসলমানরা এগিয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে তাদের প্রভাব।

বাংলাদেশ সময়: ২১২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।