ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

মমির ময়না তদন্তে উদঘাটিত ৭শ’ বছরের মৃত্যু রহস্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫
মমির ময়না তদন্তে উদঘাটিত ৭শ’ বছরের মৃত্যু রহস্য ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মমিতে পরিণত হওয়া একটি মৃতদেহের ময়না তদন্তের মধ্য দিয়ে অবশেষে উদঘাটিত হতে যাচ্ছে ৭শ’ বছরের পুরোনো একটি মৃত্যু রহস্য।

বিজ্ঞানীরা ওই মমি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সূত্র খুঁজে পেয়েছেন।



১৩২৯ সালে, ইতালির ভেরোনার শাসক, ৩৮ বছর বয়সী কানগ্রাদ ডেলা স্কালা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান। মৃত্যুর কিছুদিন আগেই তিনি ট্রেভিসো শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন।

লিখিত নথিতে আকস্মিক মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছিল- জ্বর ও পেটের অসুখ। কিন্তু একটি প্রত্নতাত্ত্বিক জার্নালের সাম্প্রতিক সংখ্যায় স্কালার মৃত্যুর কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে বিষপ্রয়োগ।

স্কালাকে বিষপানে হত্যার গুজব অবশ্য বহু দিনের পুরোনো। ২০০৪ সালে স্কালার মমিটিকে তার প্রস্তরখচিত শবাধার থেকে উদ্ধার করা হয়। গবেষকগণ এই মধ্যযুগীয় শাসকের ওই মমিতে ময়নাতদন্ত চালিয়ে চমকপ্রদ সব আলামত পান।

২০০৭ সালে, একটি প্রকাশনায় প্রথম এই আলামতের ব্যাপারে লেখা হয়। আলামতগুলোর মধ্যে ছিল- ঘুমের ওষুধ এবং কয়েক ধরণের বিষাক্ত উদ্ভিদ। হত্যার উদ্দেশ্যে এসব উপাদান স্কালার শরীরে ঢোকানো হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। এই অনুমান আরো দৃঢ় হয় যখন জানা যায় যে, স্কালার উত্তরাধিকারী মাস্তিনো দ্বিতীয় স্কালার চিকিৎসকদের একজনকে ফাঁসিতে ঝোলান।

পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতা ও বাদামী চুলের কানগ্রাদ ডেলা স্কালা লিভার ও ফুসফুসের নানাবিধ জটিল রোগে ভুগছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মমি গবেষণায় সব কিছু ছাপিয়ে সামনে চলে আসে বিষ প্রয়োগের অনুমান। গবেষকদলের প্রধান গিনো ফর্নাসিয়ার বলেন, ভুল চিকিৎসার মাধ্যমেও স্কালার শরীরে বিষাক্ত উদ্ভিদের উপাদান ঢুকতে পারে।

ভিন্নমত আছে যে, এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন স্কালার ক্ষমতালোভী ভাইপো মাস্তিনো দ্বিতীয়। যিনি কিনা নিজের অপরাধ গোপন করতে স্কালার চিকিৎসকদের একজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিলেন।
 
কানগ্রাদ ডেলা স্কালার বন্ধুদের একজন ছিলেন মহাকবি দান্তে এলিগিয়েরি। দান্তের অনেক লেখাতেও স্কালা এসেছেন  বারবার। দান্তে ফ্লোরেন্স থেকে নির্বাসিত হবার পর স্কালা’ই তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। দান্তে তার প্যারাডিসো কবিতাটিতে লিখেছেন, তাঁর উদ্যমী ও মহানুভব চরিত্রের ব্যাপারে তাঁর শত্রুরাও নীরব থাকতে পারবে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।