সিরিয়ার সরকার জানিয়েছে, তারা বেদুইন যোদ্ধাদের দ্রুজ-অধ্যুষিত শহর সুয়েইদা থেকে সরিয়ে দিয়েছে এবং শহরটির ভেতরে চলমান প্রাণঘাতী সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে। এর আগে দেশটির উত্তপ্ত দক্ষিণাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
শনিবার (১৯ জুলাই) এই ঘোষণা আসে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নির্দেশে বেদুইন ও দ্রুজ গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর। সংঘর্ষে ইসরায়েলি সামরিক হস্তক্ষেপ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া একটি চুক্তির পর এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
তবে সরকারের ঘোষণার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেও সুয়েইদা শহরে মেশিনগানের গুলির শব্দ এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে মর্টার বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেছে।
তৎক্ষণাৎ কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নূর আল-দীন বাবা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা-কে জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে এবং সুয়েইদা প্রদেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, সুয়েইদা শহর এখন উপজাতি যোদ্ধাদের থেকে মুক্ত, এবং শহরের ভেতরে আর কোনো সংঘর্ষ চলছে না।
গত সপ্তাহে এক দ্রুজ ট্রাকচালককে প্রকাশ্য সড়ক থেকে অপহরণের মাধ্যমে সুয়েইদায় সংঘর্ষের সূচনা হয়। এর জবাবে পাল্টা প্রতিশোধমূলক হামলা শুরু হয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উপজাতীয় (বেদুইন) যোদ্ধারা স্থানীয় বেদুইনদের পক্ষে সুয়েইদায় এসে জড়ো হয়।
সংঘর্ষে সিরিয়ার সরকারি সেনাবাহিনীরও সম্পৃক্ততা দেখা যায়।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বুধবার, যখন ইসরায়েল সংঘাতে হস্তক্ষেপ করে। তারা সুয়েইদা এবং সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ভারী বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, দ্রুজ সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতেই তারা এই অভিযান চালিয়েছে, কারণ দ্রুজ নেতারা সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছিলেন।
বৃহস্পতিবার সিরীয় সেনাবাহিনী সুয়েইদা থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সংঘর্ষে অন্তত ২৬০ জন নিহত এবং ১,৭০০ জন আহত হয়েছেন। তবে অন্যান্য উৎসগুলো জানায়, নিহতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়ে গেছে।
এছাড়া, চলমান সহিংসতায় ৮৭,০০০-এর বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এমএম