রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে চলা মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধ করে দিতে চান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জন্য তিনি নিজ দল রিপাবলিকানদের সমর্থন চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত এই সম্প্রচার মাধ্যম ও মূল প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৪০০ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি প্রচারণার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ১৯৪২ সালে চালু হয় ভয়েস অব আমেরিকা। প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তীতে স্নায়ু যুদ্ধের সময় মার্কিনপন্থী প্রপাগান্ডা ছড়ানোর মূল বাহন হিসেবে কাজ করেছে। অথচ সম্প্রচার মাধ্যমটি এখন বামপন্থিদের হয়ে প্রচারণা চালায় বলে দাবি করছে হোয়াইট হাউস।
ট্রাম্পের দাবি, গত কয়েল দশক ধরে পক্ষপাতমূলক মনোভাবের দিকে ঝুঁকে পড়েছে ভয়েস অব আমেরিকা। প্রতিষ্ঠানটি চালিয়ে যাওয়াকে সরকারি অর্থ ব্যয়ের নামে অপচয় বলে তিনি মনে করছেন। এমনটি থামানোর জন্য তার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এটি বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন।
ভয়েস অব আমেরিকাকে ডেমোক্র্যাটদের মুখপত্র উল্লেখ করে ট্রাম্প প্রশ্ন তোলেন, কেন একজন রিপাবলিকান এটি চালিয়ে নিতে চাইবেন? সম্প্রচার মাধ্যমটি একটি সম্পূর্ণ বামপন্থী বিপর্যয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো রিপাবলিকানেরই এর টিকে থাকার জন্য সমর্থন দেওয়া উচিত নয়। এটি বন্ধ করতে ২৫ জুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন ট্রাম্প।
এর আগে ট্রাম্পের সিনিয়র উপদেষ্টা কারি লেক হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিকে বলেন, ভয়েস অব আমেরিকার তত্ত্বাবধানকারী ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া ইউএসএজিএম ‘ভেতর থেকে পচে গেছে’। ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলতে সংবাদমাধ্যমটি পুনর্গঠন করা উচিত বলে তিনি মত দেন। কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্ট ইউএসএজিএমকে গুপ্তচরবৃত্তি, মিথ্যাচার এবং অব্যবস্থাপনার অভয়ারণ্য হিসেবে বর্ণনা করেন। যেসব প্রচারণাকে পরাজিত করতে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করা হয়েছিল, সেসব প্রচারণাকেই সংস্থাটি প্রচার করেছে বলে তিনি অভিযোগ তুলেছেন। সংস্থাটির বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগের অভিযোগও তিনি এনেছেন। তার দাবি, ওইসব নাগরিকের অনেকে আক্ষরিক অর্থেই নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ট্রাম্পের রোষ থেকে বাঁচতে পারছে না সিএনএন এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতো সংবাদমাধ্যমগুলোও। সংস্থাদুটির সমালোচনায় তার মুখর হওয়ার কারণ, তারা জানিয়েছে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, ভুয়া খবর প্রচারকারী সিএনএন, ব্যর্থ নিউ ইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে এক হয়ে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক হামলাগুলোর একটিকে হেয় করতে চাইছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প।
সিএনএন জানিয়েছে, ইরানের ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হামলায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদানগুলো ধ্বংস হয়নি, সম্ভবত তা কেবল কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গেছে।
এমএইচডি/এমএম