সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে ইলন মাস্কের বিভিন্ন বাড়িতে বিদেশি নাগরিকদের উপস্থিতি নিয়ে তদন্ত চালিয়েছিল মার্কিন ফেডারেল কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এই তদন্ত পরিচালনা করে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ও বিচার বিভাগ। তদন্তের কেন্দ্রে ছিলেন মূলত পূর্ব ইউরোপসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা সেইসব ব্যক্তি, যারা মাস্ককে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারেন বলে সন্দেহ করা হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি।
মাস্ক যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে স্পেসএক্সসহ তার কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল তথ্যের নাগাল পান। তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, কিছু অতি-সংবেদনশীল তথ্যের জন্য তিনি আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তা ছাড়পত্র পাননি। তার আশপাশে বিদেশিদের ঘনিষ্ঠ উপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি করেছিল, বিশেষ করে যখন মাস্ক ধীরে ধীরে মার্কিন রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠছিলেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনে মাস্ক প্রকাশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং সরকারি অপচয় কমাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিশেষ পরামর্শক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। যদিও সম্প্রতি অনলাইনে একে অপরের বিরুদ্ধে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মাস্কের তৈরি করা রাজনৈতিক অ্যাকশন কমিটি বিদেশিদের প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া চালু করেছিল।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দাবি করেছে, ট্রাম্পের নির্বাচনি জয়ের আগেই মাস্ক গোপনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন—যা জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন উভয় পক্ষ। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, এটি সম্পূর্ণ “মিথ্যা” এবং পুতিন ও মাস্কের মধ্যে আগে কেবল একটি ফোনালাপ হয়েছিল, সেটিও প্রযুক্তি নিয়ে।
ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের পর মাস্কের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। এক সময়ের ডেমোক্র্যাট সমর্থক মাস্ক ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের “মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা ৮০ শতাংশ মানুষের” প্রতিনিধিত্বে একটি তৃতীয় রাজনৈতিক দল গঠনের কথা ভাবছেন।
এই পুরো ঘটনা একদিকে যেমন মাস্কের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, তেমনি তার মতো একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তার নিরাপত্তা ও বিশ্ব রাজনীতির সাথে সংযোগ নিয়েও নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
এমএম