ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ মার্চে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ মার্চে টিআরএনবি কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ে ড. শাহজাহান মাহমুদ/ছবি: শোয়েব মিথুন

ঢাকা: আগামী বছরের মার্চে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) বিটিআরসি কার্যালয়ে টেলিকম খাতের সংগঠন টিআরএনবি'র নবগঠিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে একথা জানান তিনি।
 
ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ফ্রান্সে স্যাটেলাইটটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

ফ্রান্স সফরে গিয়ে আমরা সেটি ছুঁয়ে এসেছি। এখন উৎক্ষেপণের অপেক্ষায়। আশা করছি মার্চের কোনো এক সময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।
 
ফ্রান্সের থ্যালাস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাক্টরিতে তৈরি নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।  

উৎক্ষেপণে দেরি প্রসঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমেরিকান কোম্পানি স্পেস এক্স লঞ্চ করবে। আমরা বলেছিলাম, নতুন রকেট ছাড়া লঞ্চ করবো না। এই কোম্পানি পুরনো ব্যবহৃত রকেট ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করে। আমরা বলেছি পুরনো রকেট ব্যবহার করবো না। এটা একটা কারণ। স্পেস এক্স অত্যন্ত নাম করা কোম্পানি, ওদের ওখানে লম্বা লাইন। ওই লাইনের ভিতরে আমরা পড়েছি।
 
টিআরএনবি সভাপতি রাশেদ মেহেদি ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের নেতৃত্বে কমিটির সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
 
এদিকে সচিবালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ফ্লোরিডায় ‘ইরমা’ ঝড়ের কারণে শিডিউলের সমস্যা হয়েছে। আমাদের আগের যে স্যাটেলাইটগুলো উৎক্ষেপণের কথা ছিল সেগুলোও বিলম্ব হয়েছে।
 
তিনি বলেন, আমাদের স্যাটেলাইটের নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন ও হস্তান্তরও হয়ে গেছে। শিপমেন্ট শুরু হয়ে গেছে। অর্থাৎ এটি এখন লঞ্চিং প্যাডে চলে যাবে।
 
যুক্তরাষ্ট্র সফরে স্পেস এক্স ও থ্যালাসের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, তারা আমাদের বলেছে সব শেষে সাত দিনের একটি উইন্ডো দেবে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অন্যগুলো পিছিয়ে গেছে, তারা এখন ১৫ দিন পর পর উৎক্ষেপণের চেষ্টা করছে।
 
বিটিআরসি চেয়ারম্যানের মার্চের সময়সীমা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি বিষয়টি আমাদের আর একটু বিশ্লেষণ করে একেবারে সঠিক মাসটি যেন আপনাদের বলতে পারি। ফেব্রুয়ারি টু মার্চ তারা একটা উইন্ডো দিয়েছে। আমরা আরো নির্দিষ্ট করে দিতে চাই, দোয়া করবেন যেন আর যেন ঘড়-ঝঞ্ঝা না হয়।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎক্ষেপণের আগের সেকেন্ডেও একটা গ্রিন সিগন্যাল পেতে হয়। তারপরই তারা বাটন টেপেন। আবহাওয়া, মেঘ দেখতে হয়।
 
এদিকে সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইটের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রভাবের বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।
 
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় বিকল্প স্টেশন হিসেবে রাখা আছে।
 
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এটি একটি বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট এবং আলাদাভাবে স্পট থেকে তৈরি হওয়া নিজস্ব স্যাটেলাইট। বাংলাদেশকে সার্ভিস দেওয়ার জন্য এতে আলাদাভাবে ২০টি ট্রান্সপন্ডার রাখা হয়েছে। এই স্যাটেলাইটের মেয়াদ ১৫ বছর। স্যাটেলাইটের জন্য অরবিটাল স্লটও কেনা হয়েছে। উৎক্ষেপণের পর বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে।
 
২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে স্যাটেলাইট সিস্টেম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করে। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার স্যাটেলাইট সিস্টেম কিনতে ১১ নভেম্বর থ্যালাসের সঙ্গে বিটিআরসির চুক্তি সই হয়।
 
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে হংক সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) সঙ্গে প্রায় এক হাজার ৪শ কোটি টাকার ঋণচুক্তি করে বিটিআরসি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭/আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।