ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ভারত

টেট ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে জারি হচ্ছে ১৪৪ ধারা ও বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
টেট ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে জারি হচ্ছে ১৪৪ ধারা ও বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট

কলকাতা: সতর্ক পশ্চিমবঙ্গ সরকার! এবারে একেবারে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মতোই সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা এবং নজরদারি নিয়েই রাজ্যে হতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট অর্থাৎ টিচার এলিজেবেলিটি টেস্ট। আগামীতে টেট উত্তীর্ণরা মেধা তালিকা অনুযায়ী, প্রাথমিক স্কুলে চাকরির নিয়োগ পাবেন।

বর্তমানে যা নিয়ে হুলুস্থুলু চলছে রাজ্যে। উত্তীর্ণ মেধা তালিকায় নাম থাকা স্বত্ত্বেও চাকরি পায়নি প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, পেছনের সারির প্রার্থীরা টাকার বিনিময়ে স্কুলে নিয়োগ পেয়েছেন। কেন তারা বঞ্চিত? তাই নিয়েই চাকরি প্রত্যাশিদের আন্দোলোন-অনশন চলছে কলকাতায়। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় পাঁচ বছর পর প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য নেওয়া হচ্ছে টেট পরীক্ষা। তাই টেট নিয়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে চায় রাজ্য সরকার।

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সুপারিশ অনুযায়ী, শিক্ষাদফতর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রদফতরকে অনুরোধ করেছে যে, পরীক্ষা চলাকালীন যেন কেন্দ্রগুলোর আশপাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা থাকে। প্রশ্নফাঁস বা টোকাটুকি রুখতে স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলিতে যেন ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রাখা হয়। প্রয়োজনে প্রতিটা কেন্দ্রে মোবাইল পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখতে জ্যামার ব্যবহার করা হোক। এই পদ্ধতিতেই রাজ্যে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য মিলেছে। তাই চলতি বছরের ১১ ডিসেম্বর হতে চলা টেট-এও এই পদ্ধতি চালু করতে চাইছে রাজ্য শিক্ষা পর্ষদ।

এবারের টেট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লাখ ৯০ হাজার ৯৩১ জন। পরীক্ষা আয়োজনের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ১ হাজার ৪৫৩টি কেন্দ্রের। বেলা ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত নেওয়া হবে পরীক্ষা। ওইসময় ১৪৪ ধারা জারি এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার পাশাপাশি ফোটোকপির দোকানগুলিও বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এগুলোতে মান্যতা দিয়ে মমতার সরকারের তরফে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনারের কাছে ১৬ দফার গাইডলাইন পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেছেন, স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করা চলছে। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা টেট চলাকালীনও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। পরীক্ষা সুষ্ঠভাবে চালানোর জন্য তা প্রয়োজন।

এবারই প্রথম টেট-এর ওএমআর শিটের (উত্তরপত্র) প্রতিলিপি এবং প্রশ্নপত্র বাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। থাকবে মেটাল ডিটেক্টর, সিসিটিভি এবং ভিডিও রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, ওএমআর শিটে এমসিকিউ ধাঁচের প্রশ্নে পরীক্ষা হবে। তাই বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে পর্ষদকে।

কারণ, কোনওভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে বা বাইরে গেলে তা সলভ (সমাধান) করে পাঠানোটা বেশ সুবিধাজনক হবে। তাই যাতে বাইরে না যায় সেজন্য কেন্দ্রগুলোয় মোবাইল ফোন এবং সব রকমের ইলেট্রনিক গ্যাজেট কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষার আনুষঙ্গিক উপকরণের উপরও রয়েছে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা। সেসব শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইট দেখে তা নিশ্চিত হতে পরীক্ষার্থীদের কাছে বারবার আর্জি জানাচ্ছে পর্ষদ।

প্রবেশের সময় দেহতল্লাশিতে যাতে হয়রানি হতে না হয়, তারজন্য পরীক্ষার্থীদের ধাতব কিছু বহন বা গয়না পরার ব্যপারেও নিষেধজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সবমিলিয়ে অতন্ত্য সচেতন ভাবে পশ্চিমবঙ্গে এবার টেট হতে চলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
ভিএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।