ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

কলকাতার বাজারেও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
কলকাতার বাজারেও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম

কলকাতা: বিশ্বজুড়ে চলছে আর্থিক মন্দা। বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম।

ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই এর প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নিত্যপণ্যের বাজারে।  

চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসের দিকে ভারতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকে। একসময় পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি পৌঁছায় ১১৫ রুপির বেশি, ডিজেলের দাম সেঞ্চুরি পার করে। এ অবস্থায় রাজ্যগুলোতে ভ্যাট (ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স) কমিয়ে তেলের দাম কমানোর দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুর মতো একাধিক রাজ্য কেন্দ্রের সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

ওই সময়ে কলকাতায় পেট্রোল ছুঁয়েছিল ১১০ রুপির বেশি এবং ডিজেল ৯৭ এর কাছাকাছি। এরপর কেন্দ্রীয় সরকার একধাপে ৫ রুপি কমিয়ে দিলে কলকাতায় পেট্রোলের দাম হয় ১০৫ রুপি।  

তবে ভারতে জ্বালানির দাম বর্তমানে স্থিতিশীল। শেষ দাম বেড়েছিল ৮৬ দিন আগে। বুধবারও (১৭ আগস্ট) কলকাতায় পেট্রোল ১০৬.৩ রুপি এবং ডিজেল ৯২.৭৬ রুপি। এছাড়া বাংলাদেশে যা অকটেন কলকাতায় তা প্রিমিয়াম। ওই তেলের দাম কলকাতায় ১১৩.৪৪ রুপি। কেরোসিন তেল প্রতি লিটার ৮৮ রুপি এবং রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার প্রতি(১৫.৬ কেজি) ১ হাজার ৭৯ রুপি।    

বিক্রেতাদের মতে, জ্বালানি তেলের এমন দামের কারনে স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পড়ছে চাল, ডাল, তেল, লবণের মত নিত্যপণ্য থেকে সবজি বাজারগুলোতেও। অন্তত এমনটাই মত বিক্রেতাদের।  

বিক্রেতারা বলছেন, মান অনুযায়ী কেজিপ্রতি চালে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১৫ রুপি।

এদিকে ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার থেকে রেশন শপগুলো মাথাপিছু বিনামুল্যে চাল, গম দিয়ে থাকে। একজন মাথাপিছু মাসে ২ কেজি চাল ও ২ কেজি গম বিনামুল্যে রাজ্য সরকারের তরফে পেয়ে থাকেন। এছাড়া কেন্দ্র সরকারের থেকেও একই পরিমাণের চাল, গম পেয়ে থাকেন তারা।

পাশাপাশি রেশন কার্ডের মান (সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণ, গরীব ও অতি গরীব) অনুযায়ী, চাল ও গমের পরিমাণও বাড়ে। অতি গরীবের পরিমাণ সবসময় বেশি।  

এদিকে আবার গম ভাঙিয়ে আটা পেতে প্রতিকেজি খরচ হয় ৭ থেকে ৯ রুপি। অথচ দোকানে সেই আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৬ রুপি। অর্থাৎ রেশন কার্ড না থাকলে চাল, গম কিনতে অনেক রুপি খরচ হত। ফলে কলকাতাবাসী রেশনের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল।

এছাড়া বাজারে মুগের ডাল, মুসুর ও বুটের ডাল কেজি প্রতি যথাক্রমে ১৮০, ১২৮, ৯০ রুপি। লবণ ১ কেজি ৪০ রুপি। চিনি কেজিপ্রতি ৪৩ রুপি। ডিমের হালি ২২ ও দেশি ৪০ রুপি। সয়াবিন তেল ও সরিষার তেল যথাক্রমে ১৬৮, ১৮৫ রুপি। এছাড়া মশলার দামও আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে। এক কেজি সবুজ এলাচ, যা ১৪শ রুপি ছিল তা কেজিপ্রতি ৪শ’ রুপি বেড়েছে। দারুচিনির কেজি ৩শ’ থেকে ৪শ’ রুপি।

এদিকে কলকাতার বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৩০ থেকে ৪০ রুপি করে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ একশো গ্রাম ১৫ রুপি। আলুর কেজি ২৮ রুপি, ঢেঁড়শ ৩০, পটল ৩০, ঝিঙ্গা ২৫, কুমড়ো ৩০, বেগুন ৪০, শসা ৪০-৫০, টমেটো ৪০, সজনে ডাটার কেজি ১৫০ রুপি।

খুচরা সবজি বিক্রেতা সুশান্ত বলেন, দাম বাড়লে এখনও আয়ত্তের মধ্যেই আছে। তবে সামনেই পূজার মৌসুম। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সব কিছুর দাম আবার বাড়তে পারে। যদিও ক্রেতাদের একাংশের কথা সরকারের নজর না থাকে তাহলে দাম নাগালের বাইরে চলে যায়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে আসার পর কয়েকবার বাজার ঘুরে অসাধু ব্যবসায়ীদের ধরপাকড় করেছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
ভিএস/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।