ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

ভবানীপুর জিতলেই আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকব

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
ভবানীপুর জিতলেই আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকব কথা বলছেন মমতা।

কলকাতা: আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গে উপ-নির্বাচন। আক্ষরিক অর্থে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোনোকালেই নিরাশ না করলেও কিছুটা হলেও চাপে আছেন তিনি।

 কারণ এবারের উপ-নির্বাচন শুধুমাত্র নামমাত্র ভোট নয়, তার কাছে এক মরণ-বাঁচন ‘খেলা’।

আগামীতে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে থাকতে হলে ভবানীপুরের উপ-নির্বাচন জিততেই হবে তৃণমূল প্রার্থী মমতাকে। ফলে প্রচারে কোনো ধরনের খামতি রাখছে না মমতার দল। পাশাপাশি বাড়তি জনসংযোগ এবং জনসভায় নজর দিয়েছেন স্বয়ং দলনেত্রীও।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রচারসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

এদিন বিজেপি বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু আবেগী মন্তব্যও করেছেন মমতা।

তৃণমূলের নেত্রী বলেন, নন্দীগ্রামে আমাকে হারানোর নামে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। নন্দীগ্রামে কী হয়েছে শুনলে সবাই ভয় পাবেন। কিন্তু ওসব কথা এখনই আপনাদের সামনে বলতে চাই না। শুধু এইটুকু মনে রাখুন আপনাদের হাতেই সবকিছু। আপনারা জানেন ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে জিতলেই তবেই আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবো। এটাই ভবিতব্য। উপরওয়ালা সবকিছু লিখে রেখেছেন। তাই আপনাদের ছেড়ে আমার কোথাও যাওয়া সম্ভব নয়।

এরপরই আবেগতাড়িত ভাষণে মমতা বোঝান-কেনো ভবানীপুরের উপ-নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ, কেনো ভোটারের ভোট দেওয়া প্রয়োজন।  

মমতা বলেন, এবারের উপ-নির্বাচনের অন্য গুরুত্ব রয়েছে। ভাববেন না দিদি দাঁড়িয়েছে, তাই জিতে যাবে। সবাই ভোট দেবেন। প্রতিটি ভোট খুব দামি। আমি না জিতলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারব না। তৃণমূল সরকার চালাবে, কিন্তু অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবে।

এরপরই প্রচারে বিজেপিকে এক তরফা নিশানা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিধানসভা ভোটের মত মমতার মুখে এদিনও শোনা যায় 'খেলা হবে' ধ্বনি।

তিনি বলেন, ‘ভোটের ময়দানে খেলা হবে। বিজেপিকে দেশ থেকে হটাতে এখানেও যেমনি খেলা হয়েছে তেমনি খেলা হবে ত্রিপুরা, গোয়া, উত্তরপ্রদেশে। বিজেপিকে দেশ থেকে হটাবই।

দেশকে ভেঙে টুকরো টুকরো করার চেষ্টা করছে। বাংলাকেও ওরা ভাঙার চেষ্টা করেছিলো। ভেদাভেদের রাজনীতি করছে। কিন্তু, বিজেপি দেশটাকে তালেবান করবে তা আমরা কিছুতেই মানব না। বাংলা ভাগও হতে দেব না।

সবশেষে, ভবানীপুরের ভোটারদের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বান, আপনারা আমাকে বিশ্বাস করেন, আমি আপনাদের। তাই ঠাণ্ডা মাথায় ভোটটা দিন। বাকি পাঁচ বছর সব পাহারাদারি দায়িত্ব আমাদের। মনে রাখবেন তৃণমূলের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, ফলে বিজেপি আমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। এছাড়া রাজ্য সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প ও কাজের খতিয়ানও প্রচারে তুলে ধরেন তৃণমূল নেত্রী।

অপরদিকে ভবানীপুর তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হলেও একুশের বিধানসভায় নন্দীগ্রামের ফলাফল পুনরাবৃত্তির মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। প্রার্থী করা হয়েছে অবাঙালি লড়াকু নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকে। খাতায় কলমে অ্যাডভানটেজ মমতা হলেও জোর কদমে প্রচার চালাচ্ছে তারাও।

মূলত ভবানীপুর কেন্দ্রের নিরিখে সংখ্যালঘু বাঙালিরাই। ফলে প্রচারে কোনো ধরনের খামতি রাখছেন না প্রিয়াঙ্কা। একুশের বিধানসভার ফলাফল তাদের বিপক্ষে গেলেও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ভবানীপুর কেন্দ্রে কিছুটা ব্যাক ফুটে আছে মমতার দল। ফলে তারাও সুর চড়াচ্ছে।

এদিনই বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দায়িত্ব নেওয়ার পরই মমতার পাড়া থেকে ভোট প্রচার শুরু করেন।

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, ভবানীপুর অতীতে সবসময়ই তৃণমূলের সঙ্গে ছিল। এবারের উপ-নির্বাচনেও অ্যাডভানটেজ মমতার। কিন্তু, ‘ডু অর ডাই’ ভোটে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না নেত্রী। তাই বিজেপিকে আক্রমণ করে শুধু রাজনৈতিক প্রচারপর্ব সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি মমতা। নিজস্ব বাচনভঙ্গিতে কৌশলে ভোটারদের আবেগও উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।