ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

‘বাংলা ভাগ’ নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে বিজেপির অন্দরেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২১
‘বাংলা ভাগ’ নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে বিজেপির অন্দরেই

কলকাতা: কয়েকদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে আলাদা রাজ্যের দাবি করেছিলেন বিজেপির দুই সংসদ সদস্য। তবে ওই সদস্যদের সঙ্গে একমত নয় তাদের দল।

‘তারা আঞ্চলিক সমস্যার উন্নয়ন না হওয়ায় হতাশাকে প্রাধান্য দিয়েই এমন মন্তব্য করেছেন। বিজেপি সর্বদা অখণ্ড বাংলার পক্ষেই। ’ মঙ্গলবার (২২ জুন) প্রকাশ্যে এমনটাই জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এর সঙ্গে তিনি বলেন, আমি আমার দলের সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গকে একটা রাজ্য হিসেবেই মনে করে। আমরা চাই বাংলা একটাই থাক।

একুশের বিধানসভা ভোট মিটতেই কয়েকদিন ধরেই বাংলা ভাগের দাবি করছে বিজেপি দুই সংসদ সদস্য। যে মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিতে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গকে ভাগ করে আলাদা রাজ্য করা হোক এবং সেই রাজ্য থাক কেন্দ্রের হাতে। গত শুক্রবার (১৮ জুন) এমটাই দাবি জানিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ সদস্য জন বার্লা।

তার কথায় দিল্লি, কাশ্মীরের মতো উত্তরবঙ্গ হোক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল। তবেই এলাকার উন্নয়ন হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির কাছে যাবেন, এমনকী নিজের দলের রাজ্য নেতাদেরও বোঝাবেন বলে জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া অর্থাৎ রাজ্যের জঙ্গলমহল বলে পরিচিত তা নিয়েও আলাদা রাজ্যের দাবি তুলেছেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁ।

এরপরই প্রকাশ্যে দুই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আলাদা রাজ্য নিয়ে মন্তব্যের জন্য দলের দুই সংসদ সদস্য জন বার্লা ও সৌমিত্র খাঁকে সতর্কও করে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। দলের তরফে সভাপতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নিজের এলাকায় উন্নয়ন নিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন। তবে আলাদা রাজ্যের দাবি কখনই তোলা যাবে না।  

কিন্তু তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেই ক্ষোভ বাড়ছে। যে যার মতো মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

সভাপতির এ মন্তব্যের পর এবার মুখ খুলেছেন ত্রিপুরার সাবেক রাজ্যপাল তথা পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির প্রবীণ নেতা তথাগত রায়। মঙ্গলবার ফেসবুক পোস্টে বিজেপি নেতা তথাগত রায় লিখেছেন, ‘পশ্চিমবাংলার সংসদ সদস্যরা কেউ চাইছেন উত্তরবঙ্গ, রাঢ়বঙ্গ আলাদা হোক। এগুলোকে গুরুত্ব দেবার এখনই কোনো দরকার নেই। কিন্তু একসময় বাংলার মতো পাঞ্জাবও ভাগ হয়েছিল। তারপরেও পাঞ্জাব ভেঙে কী হরিয়ানা হয়নি?

কয়েকদিন আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে এ বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, এখানে গোহারা হেরে কোনো ইস্যু না পেয়ে রাজ্যবাসীকে আবার জ্বালাতে শুরু করেছে। সবাই দেখছে কেন্দ্রশাসিত কাশ্মীরের কী অবস্থা। এখানেও তাই করতে চায় তারা। আমি বেঁচে থাকতে বাংলা ভাগ কখনই হতে দেবো না।

বাংলা ভাগ বিতর্কে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর ছড়িয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী মন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। গত সোমবার (২১ জুন) তিনি বলেছিলেন, একদিকে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করছে, অন্যদিকে বাংলা ভাগ করার দাবি জানাচ্ছে। বিজেপির মধ্যে এ কোন ইতিহাস চেতনা। এটা হাস্যকর দ্বিচারিতা।

একই মত পোষণ করেছে কংগ্রেস-সিপিএমও। পাশাপাশি বাংলা ভাগের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই সহমত নয় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা, তাও তারা জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তা নিয়ে অসন্তোষের পিছু ছাড়ছে না বিজেপি দলের অন্দরেই।  

বাংলাদেশ সময়: ০০১২ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২১
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।