ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ভারত

ভোটব্যাংকে হাত পড়েছে, ঘুম নেই বিজেপির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৯
ভোটব্যাংকে হাত পড়েছে, ঘুম নেই বিজেপির এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা বাতিলের দাবিতে আসামে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: আসামে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ বাঙালির নাম। এ নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। বলা হচ্ছে, নিজেদের চালে নিজেরাই মাত হয়েছে তারা। তথ্য বলছে, বিজেপির দাবিতে আসামে যে এনআরসি হাওয়া উঠেছিল, এতে অজান্তে তাদেরই ভোটব্যাংকে হাত পড়ে গেছে।

সূত্র বলছে, তালিকা থেকে বাদ পড়া হিন্দু বাঙালির সংখ্যা ১১ লাখ নয়, আরও বেশি। এ নিয়ে রীতিমতো ঘুম উড়ে গেছে বিজেপি-শাসিত আসাম সরকারের।

ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অথচ, নাগরিকপঞ্জি করার জোরালো দাবি তুলেছিল এ সরকারই।

এনআরসি নিয়ে যে দলটি সবচেয়ে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছিল, সেই তৃণমূল কংগ্রেস এ সুযোগে গলা চড়াতে শুরু করছে। দলের সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণ শানিয়ে এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, বাংলাভাষী ভাই-বোনদের জন্য খারাপ লাগছে। যাঁতাকলে পড়ে ভুগতে হয়েছে তাদের। রাজনৈতিক লাভ তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে এনআরসি। দেশকে জবাব দিতে হবে তাদের। দেশ ও সমাজের সঙ্গে অসৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলে এমনটাই হয়।

এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়েছে ১৯ লাখ বাঙালি। অদ্ভুতভাবে, এ রায় নিয়ে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস-বিজেপি দু’পক্ষই। দু’দলই মনে করছে, বৈধ নাগরিকরাই বাদ পড়েছে আর ঢুকে পড়েছে বহিরাগতরা।

হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা দক্ষিণ সালমারা, ধুবড়ির মতো এলাকায় অনুপ্রবেশকারীদের বাদ পড়ার হার সবচেয়ে কম। তার চেয়ে যেসব জেলায় প্রকৃত অসমীয়রা বাস করেন, সেখানে বাদ পড়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।  

সরাসরি বাংলাদেশি তকমা না তুললেও বৈধ নাগরিকরাই বাদ পড়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আসাম কংগ্রেসও। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, ভোটব্যাংকে হাত পড়েছে দুই পক্ষেরই।

এতে চিন্তায় পড়েছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালও। পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি জানিয়েছেন, যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। এখনই তারা বিদেশি নন। আগামী ১২০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন তারা। সেখানেও নাম না উঠলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আবেদন জানাতে পারবেন দেশটির হাইকোর্ট, তারপর সুপ্রিম কোর্টেও। এ প্রক্রিয়া চলাকালে কাউকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে না। তারা আগেও যেভাবে নাগরিক হিসেবে দিনযাপন করছিলেন, এখনও সেভাবেই থাকবেন।  

তারপরও, বাড়তি সতর্কতা হিসেবে রাজ্যের একাধিক স্পর্শকাতর জেলায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।  

রাজীব গান্ধী ও আসাম গণ পরিষদের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর যারাই আসামে এসেছে, তাদের সবাইকে অনুপ্রবেশকারী তথা বেআইনি নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯
ভিএস/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।