ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

কমছে রুপির দর, উদ্বিগ্ন ভারত সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
কমছে রুপির দর, উদ্বিগ্ন ভারত সরকার

কলকাতা: ভারতে দ্রুত কমছে রুপির মান। প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে বর্তমানে ভারতীয় মুদ্রার দর ঠেকেছে ৭৩ রুপিতে। এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে ভারত সরকারের।

এই ভয়াবহ আর্থিক সংকট থেকে বাঁচতে ও বিনিয়োগ বাড়াতে ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

বৈঠকে প্রত্যক্ষভাবে বিদেশি বিনিয়োগের একাধিক ক্ষেত্র উন্মুক্ত করার পাশাপাশি কয়লা থেকে উৎপাদন শিল্প, অনলাইনে খুচরা ব্যবসা থেকে শুরু করে ডিজিটাল মিডিয়ার পথ প্রশস্ত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি ভারতের বাজেট পেশের সময় বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করার আভাস দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই সিদ্ধান্ত মতোই বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্র আরও বাড়ানো হয়েছে।

কয়লা ইউনিটে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ ১০০ শতাংশই খোলা হয়েছে। অর্থাৎ যে সব উৎপাদন সংস্থাগুলো চুক্তির মাধ্যমে শিল্পোৎপাদন করে থাকে, তাদের জন্য ১০০ শতাংশ এফডিআই বা বিদেশি বিনিয়োগের পথ খোলা হচ্ছে।

ডিজিটাল মিডিয়া বা অনলাইন জগতেও আসছে বড় পরিবর্তন। ডিজিটাল মিডিয়ায় ২৬ শতাংশ এফডিআই ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ যে সব ডিজিটাল মিডিয়ার ভারতীয় মালিকানা আছে, তাদের ২৬ শতাংশ শেয়ার কিনতে পারবে বিদেশি সংস্থাগুলোও।

ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) থেকে এক লাখ ৭৬ হাজার কোটি রুপি নিয়ে আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে দেশটির সরকার। তবে বর্তমানে মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ভারতীয় মুদ্রার দর ক্রমাগত হ্রাসের কারণে উদ্বিগ্ন সরকার। যা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির অর্থনৈতিক সমীক্ষক সংস্থাগুলোও।

এই হ্রাসের প্রবণতা এরকম থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে বর্তমানে ভারতীয় মুদ্রার দর এতটাই কমে যাবে, যা বিগত ছয় বছরের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যাবে।  

এর আগে ২০১৮ সালের অক্টোবরে ডলারপ্রতি ভারতীয় মুদ্রার দর হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৭৪ রুপি। এবার সেই পতনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ এই মুহূর্তেই ডলারপ্রতি ভারতীয় মুদ্রার বিনিময়মূল্য প্রায় ৭৩ রুপি স্পর্শ করছে।

এদিকে ভারতীয় রুপির দর পতনে বাংলাদেশি ১০০ টাকার বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রার বর্তমান দর ঠেকেছে ৮৫ রুপিতে।

রুপির দর ক্রমাগত কমতে থাকায় ভারতে বৈদেশিক বিনিয়োগেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগ কম থাকায় নতুন শিল্পস্থান প্রায় শূন্য। এছাড়া ক্ষতির মুখে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসাও।

ফলে ধারণা করা হচ্ছে, বড় সংকটময় পরিস্থিতি আসতে যাচ্ছে ভারতে। এ অবস্থায় আর্থিক সংকট মোকাবিলা ও বিশেষ করে কর্মসংস্থান রক্ষা করতে সরকারের সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে ফের বৈঠক হবে বলেও বৃহস্পতিবারের বৈঠকে জানানো হয়।  

কেন রুপির মূল্য কমছে? 

ভারত সরকারের মতে, মূলত আমেরিকা ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্যিক যুদ্ধ প্রকট হওয়ায় এর প্রভাব পড়ছে এশিয়ার একাধিক দেশের মুদ্রার ওপর। ওই বাণিজ্যিক যুদ্ধের জেরেই ডলারের চাহিদা প্রবলভাবে বেড়েছে। ফলে কমছে ভারতীয় রুপির দর। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ভারতের শিল্পক্ষেত্রের মন্দা বাজারও।  

একইসঙ্গে ভারত সরকারের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে- দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হার। চলতি বছরের শেষ তিন মাসে জিডিপি বৃদ্ধির হার কত হতে চলে চলেছে, তাই এখন দেখার অপেক্ষা। কয়েকদিনের মধ্যেই দেশটির জিডিপির পরিসংখ্যান প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
ভিএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।