ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

নয়নার হাত ধরে কলকাতা পাচ্ছে বাংলাদেশের স্বাদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৯
নয়নার হাত ধরে কলকাতা পাচ্ছে বাংলাদেশের স্বাদ ছবি:সংগৃহীত

কলকাতা: এই ধরুন কুষ্টিয়ার মাসকলাই ডাল দিয়ে ইলিশের মাথা, মানকচুর মালাইকারী, বিক্রমপুরের বেগুন খাসি, বরিশালের হাঁসের ডিমের ভুনা, চাঁদপুরের হাতেমাখা ইলিশ সরিষার ঝাল, কক্সবাজারের রুপচাদা মাছের রোষ্ট, ফরিদপুরের ইলিশের দো পেয়াজা, খুলনার চিংড়ি কোর্মা, বাগেরহাটের চুঁই ঝালের হাঁস, সিলেটের সাতকড়া দিয়ে খাসি সাথে ডেজার্ট বলতে রাজশাহীর পাকা আমের হালুয়া এবং লাচ্চা কাসটার্ড। ভিনদেশে এসে পাতে যদি পরে বাংলাদেশ! কেমন হবে? কলকাতার অ্যাস্টোর হোটেলে এরকম ১৫টি জেলাকে একপাতে আনলেন বাংলাদেশি বউ নয়না আফরোজ।

জার্নিটা শুরু হয়েছিল অনেকটা জেদের বশে। শহরের খাদ্যরসিকদের বাংলাদেশি রান্না চেনাতে।

কলকাতার মেয়ে নয়না বিয়ে করেন বাংলাদেশে। তাই দুই বাংলাই নিজের। ‘কিন্তু কলকাতায় যে সব রেস্তোরাগুলো বাংলাদেশি রান্না বলে মানুষকে খাওয়াচ্ছেন, সন্দেহ আছে সেগুলো বাংলাদেশি কিনা? কারণ নাম হলেই তো হবে না। পিপারেশনটাও বাংলাদেশি আদলে হতে হবে। উপাদানের কথা না হয় বাদই দিলাম। ’ এমটাই বললেন নয়না আফরোজ। ‘...দেখুন মানুষ টাকা দিয়ে শেকড়ের টানে হোক বা আবেগের বশে হোক অথবা বাংলাদেশি খাবার ভেবে হোক তারা খাচ্ছেন। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে বলছি কলকাতার বেশীর ভাগ রেস্তোরায় যেসব বাংলাদেশি রান্না বলে খাওয়ান একটাও বাংলাদেশি স্টাইলে হয় না। ’

আপনার তো রেস্তোরা নেই? ‘খাওয়াতে হলে রেস্তোরা খুলতে হবে নাকি। আমি যখন কলকাতায় আসি। বিভিন্ন হোটেল বা রেস্তরার শেফেদের নিয়ে বাংলাদেশি একটা ফুড ফেস্টিভ্যাল করি। এই ধরুন এবার অ্যাস্টোর হোটেলে ১৯ থেকে ৩১ জুলাই ফেস্টিভ্যাল হবে। এরকম ছয় জায়গায় আগে করেছি। দেখলাম শেফেরাও আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এনারাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশি রান্না ঠিকঠাক সার্ভ করছেন কলকাতার মানুষদের। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে যারা আসছেন তারা খেলেই বুঝতে পারবেন। ’

নয়না আফরোজ কলকাতার খাদ্যরসিক মানুষদের কাছে এখন পরিচিত নাম। কলকাতার যেকোনো রেস্তোরা তার সাথে কাজ করথে চায়। শুধু রান্না শেখানো নয় পাশাপাশি বাণিজ্যিক দিকেরও প্রসার ঘটাচ্ছেন। তার কথায় শুধু রেসিপি জানলে তো হবে না। যেদেশ যে উপাদানগুলো রান্নায় ব্যবহার করা হয় সেটা সেই দেশেরই হওয়া উচিত। নিজে সে ভাবে বাণিজ্যিক বিষয়টা নিয়ে না ভাবলেও ভাবছেন সেসব হোটেল বা রেস্তরাগুলো।

যেমনটা বলছিলেন, অ্যাস্টোর হোটেলের এক্সজিকিউটিভ শেফ অভিজিৎ দাস। ‘রান্নার স্বাদ ও ঘ্রান আরও বাড়ে সেই অঞ্চেলের উপাদানটা পেলে। এমনি কি হয় না? হয়, তবে স্বাদ অনেকটাই বাড়ে অঞ্চল ভিত্তিক উপাদানগুলো অ্যারেঞ্জ করলে। আমার ঠিক করেছি কালজিরা চাল, মাসকালাইয়ে ডাল এবং সাতকড়া লেবুসহ আরও কয়েকটি উপাদান বাংলাদেশ থেকে কালেক্ট করবো। সারাবছরই বাঙালি খাবার আমাদের হোটেলে পাওয়া যায়। এরসাথে রেগুলার কিছু বাংলাদেশি ডিশ রাখবো। ’

উৎসবের প্রধান অতিথি, বাংলাদেশ উপদুতাবাস প্রধান তৌফিক হাসান বলেন, কলকাতায় বসে বাংলাদেশী খাবার খাওয়াটা এক কথায় আলাদা অনুভুতি। তার জন্য উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ এবং এই উৎসবের যে টাইটেলটা দিয়েছে এটাও ইন্টাররেস্টেং। ‘পদ্মা পাড়ের পাকঘর’ নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে পুরোপুরি বাংলাদেশকে রিপ্রেজন্ট করছে। আর সাহিত্য সংস্কৃতির সাথে, রন্ধন শিল্পের আদান প্রদান হলে দুই দেশের হৃদ্যতা আরও অন্যমাত্রা পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৯
ভিএস/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।