ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

তৃণমূলকে কোণঠাসায় মরিয়া বিজেপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৯
তৃণমূলকে কোণঠাসায় মরিয়া বিজেপি

কলকাতা: রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস ২১ জুলাইকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এবার জুলাই মাসের ওই দিবসের পাল্টা হিসেবে আগামী আগস্ট মাসেই কলকাতায় দুটো বড় সমাবেশ করতে চলেছে বিজেপি। 

একটিতে উপস্থিত থাকবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অপরটিতে হাজির থাকবেন দলের জাতীয় কার্যকরী সভাপতি জেপি নাড্ডা।

বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সংসদ সদস্য (এমপি) দিলীপ ঘোষ একথা জানিয়েছেন।  

তিনি জানান, এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের মোট ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি ১৮টি আসনে জয় পাওয়ার পরে কলকাতায় বিজয়োৎসব করতে চেয়েছিলেন স্বয়ং অমিত শাহ। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই বিজয়োৎসব আর করে ওঠা যায়নি। সেই বিজয়োৎসবের পরিবর্তেই কলকাতায় দুটো বড়সড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য বিজেপি।  

দিলীপ ঘোষ বলেন, আগামী ২১ জুলাই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস কতটা সাফল্যের সঙ্গে শহীদ দিবস পালন করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ তৃণমূলের শহীদ দিবস পালনের টাকা কোথায়? কাটমানির সব টাকাই তো ফেরত দিতে হচ্ছে? 

রাজনৈতিক মহলের মতে, কলকাতায় দুটো বড় সমাবেশের আয়োজন করে বিজেপি আদতে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চাইছে। সপ্তদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশনের একেবারে গোড়া থেকেই পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে মরিয়া হয়েছে বিজেপি।  

এছাড়া এদিন সংসদ ভবনে পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছেন বাংলার বিজেপি এমপিরা। সংসদে এক ভাষণে বারাকপুরের বিজেপি সংসদ সদস্য অর্জুন সিং বলেন, রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলোতে মাত্রাছাড়া গরু পাচারের ঘটনা ঘটছে। খোদ তৃণমূলে শীর্ষ নেতৃত্বের মদতেই এই ঘটনা ঘটছে। সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদক এবং জাল নোট রাজ্যে ঢুকছে। অবিলম্বে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে রাজ্যের অত্যাচারী শাসন থেকে বাংলার মানুষকে মুক্ত করা হোক।  
তবে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অর্জুন সিংয়ের এহেন বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন সংসদে উপস্থিত তৃণমূল এমপিরা।

পাশাপাশি জঙ্গিঘাঁটি ও অনুপ্রবেশ রুখতে সীমান্ত সুরক্ষায় পশ্চিমবঙ্গকে বুধবার (০৩ জুলাই) বিপুল অর্থ সাহায্য করেছে কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের অক্টোবরে বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরই পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গিচক্রের খোঁজ মেলে।  

এরপর সীমান্তের অনুপ্রবেশ মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে ৩১৬ কোটি রুপি আর্থিক সাহায্যের অনুমোদন দিয়েছে মোদী সরকার। যা সীমান্ত নিরাপত্তায় গোটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ অর্থ বলেই জানা গেলো।  

এছাড়া ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাড়ানো হচ্ছে পোস্টের সংখ্যা। উচ্চপ্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ও নাইট ভিশনের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।  

এর পাশাপাশি এলাকা চিহ্নিতকরণও করা হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েল তরফে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতে গণতান্ত্রিক সরকার ফেলে সেখানে শরিয়া প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই করছে জেএমবি। সেজন্য এরাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় গোপন আস্তানা তৈরি করেছে তারা।

সব মিলিয়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে কোনঠাসা করতে এবং বিজেপির প্রভাব বিস্তার করতে আরও কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে মোদী সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
ভিএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।