ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

নিরাপদ সড়ক: নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
নিরাপদ সড়ক: নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও

কলকাতা: বাংলাদেশে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে যেন প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও। সড়ক দুর্ঘটনার কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ শিরোনামের এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে দুর্ঘটনা অনেক এড়ানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাজ্য সরকারের পরিবহন দফতরের একটি সূত্র বলছে, স্কুলগুলোতে সড়ক নিরাপত্তার ব্যাপারে পাঠের বিষয়বস্তুর একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রাস্তায় রাস্তায় বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, যানবাহনের অত্যধিক চাপ থাকে এমন ব্যস্ত রাস্তার পাশে বহু স্কুল শুরু হওয়ার সময় প্রতিদিনই স্কুলের গেটের মুখে ভিড় জমে। আবার ছুটির সময় সেই ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কারণ, একসঙ্গে সব ছাত্রছাত্রী বের হয়। অভিভাবকেরাও শিক্ষার্থীদের নিতে যান। তাই ভিড়ের মধ্যে রাস্তা পার হতে গিয়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটে। এই কথা ভেবেই প্রশাসন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে পাঠ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

এ বিষয়ে একটি জেলার শাসক অন্তরা আচার্য বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা সবাই সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে সঠিকভাবে সচেতন নয়। অথচ তাদেরই আগে শেখানো প্রয়োজন। তাই আমরা ঠিক করেছি, আপাতত প্রতিমাসে একদিন করে স্কুলেই তাদের জন্য এই সম্পর্কে একটি ক্লাসের ব্যবস্থা করবো।

তিনি জানান, নিরাপদ সড়কের জন্য নিয়ম-নীতির খসড়া পরিবহন দফতরকে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে থাকছে স্কুলের বাইরে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিজিটাল স্পিড লিমিট বোর্ড লাগানো, পরপর দু’টি বা তিনটি স্পিড ব্রেকার বসানো, জেব্রা ক্রসিং তৈরি করা, স্কুলের সামনে যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ করে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পার্কিং করা ইত্যাদি।

প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল তাদের পুলকারে (নিজস্ব গাড়ি) শিক্ষার্থীদের আনা নেওয়া করলেও অনেক বাহনেরই বৈধ কাগজপত্র নেই, ফিটনেসও নেই। আবার অনেক পুলকারের চালকের বয়সও ১৮ বছরের কম। তাই এসব পুলকারের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে।

পাশাপাশি নিরাপদ সড়কের জন্য রাস্তার মাঝখানে ডিভাইডার গুলিতে রিফ্লেক্টর বসানোও হবে, যাতে ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে, সেসব এড়ানো যায়। এছাড়া রাজ্যের সব গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে মনস্তাত্ত্বিক দাওয়াই হিসেবে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ লেখা স্টিকার লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে। এই স্টিকার পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় এ সংক্রান্ত বিশাল আকারের প্রচারণামূলক বিলবোর্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দিয়েও ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’র প্রচার চলতে দেখা যায়। তবু যেন সামলানো যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা।

সম্প্রতি সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে বাংলাদেশের রাজপথ উত্তাল হলে এর রেশ দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গেও। নিরাপদ সড়কের দাবিতে একাত্ম হয়ে আন্দোলনে নামতে দেখা যায় কলকাতার কিছু শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীকেও। তারপর রাজ্য সরকার যেন আরও নড়েচড়ে বসলো নিরাপদ সড়ক ইস্যুতে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, ১০ আগস্ট, ২০১৮
ভিএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।