ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

ত্রিপুরার নির্বাচনী ফলে ঘুম উবেছে মমতার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৮
ত্রিপুরার নির্বাচনী ফলে ঘুম উবেছে মমতার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ফাইল ছবি)

কলকাতা: ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি। এ ফলাফলে সেখান থেকে ধুয়েমুছে সাফ হলো কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস। 

এতদিন ত্রিপুরার মূল বিরোধী দল ছিলো কংগ্রেস। এবার তারা খাতাই খুলতে পারেনি।

তৃণমূলেরও অবস্থাও একই। পশ্চিমবঙ্গ থেকে সমস্ত শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেও অবশেষে তৃণমূলের প্রত্যেক প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে। এতে রীতিমতো ঘুম চলে গেছে ‘ঘাসফুল’ সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

ফলাফলের একদিন আগে (২ মার্চ) প্রকাশ্যে তিনি বলেছিলেন, ‘ত্রিপুরায় বামেরা জিতলে বেশি খুশি হবো। ’ কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।  

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ত্রিপুরায় তৃণমূলের শোচনীয় হার থেকেও তারা বেশি চিন্তিত প্রতিবেশি রাজ্য নাগাল্যান্ডে বিজেপির উত্থান নিয়ে। কারণ গোটা দেশে সবচেয়ে বেশি মোদী সরকারের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  

পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির বাড়বাড়ন্ত তাকে যথেষ্ট চাপে রেখেছে। তাই ত্রিপুরার ফলাফল বাংলার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। যদিও তৃণমূল শিবির তা মানতে নারাজ।

পশ্চিমবঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বামেরা ত্রিপুরায় নিজেদের বড় মনে করেছিল। বিজেপিকে আটকানোর জন্য সব বিরোধীদের নিয়ে বামেদের ঝাঁপিয়ে পড়া উচিৎ ছিল। কিন্তু তারা তা করেনি। এই ইগোতেই তারা শেষ হয়েছে।  

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে এক জোটে লড়বে কি না প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তা কখনই হবে না। এখানে বিজেপি আর বাম এক অপরের মদতপুষ্ট। আর ভোটের লড়াই রাজ্যভিত্তিক নির্ভর করে।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মানুষকে বিরোধীরা যতই ভুল বোঝাক তারা ভরসা রাখে বিজেপিতে। ত্রিপুরা নিয়ে দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)  আশা পূরণ হলো না। দিদির মন ভেঙে গেছে। এবার দিদির এ রাজ্যেও অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।  

ত্রিপুরার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গে পড়বে কি না জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন,  অবশ্যই পড়বে। সাধারণ মানুষ ত্রিপুরায় পরিবর্তন এনেছে, এ রাজ্যেও এবার সাধারণ মানুষই পরিবর্তন আনবে। ইতোমধ্যে ত্রিপুরার জয়ের উল্লাস এ রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে।  

পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরা রাজ্যে আধিপত্য বিস্তার করেছিল মুকুল রায়ের হাত ধরে। এখন তিনি বিজেপিতে। মুকুল রায় সাংবাদিকদের বলেন, ত্রিপুরায় যে ফল উচিৎ ছিল তাই হয়েছে। এবার পরিবর্তন হবে পশ্চিমবঙ্গে। তবে এখনও এ রাজ্যে বামেরা মুখ খোলেনি। ভারত থেকে তাদের অস্তিত্ব প্রায় মুছে গেল।

যে যাই বলুক পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল শিবিরের অস্তিত্ব যে শঙ্কার মধ্যে আছে তা বুঝতে পারছে তৃণমূল সুপ্রিমো। কারণ মুকুল রায়ের যথেষ্ট প্রভাব আছে পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে। আর সামনেই গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত ভোট।  

আবার ২০২১ সালে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে বিধানসভা ভোট। আর এই পঞ্চায়েত ভোট পশ্চিমবঙ্গে কারা সরকার গড়বে তার ইঙ্গিত দেবে। ফল যাই হোক, পঞ্চায়েত ভোটে যে বিজেপি সহজে জমি ছেড়ে দেবে না তা তৃণমূলের স্বভাবে বোঝা যাচ্ছে। কারণ পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস ও বামেদের অস্বিস্ত প্রায় বিলীন। তাই মূল লড়াই হবে বিজেপির সঙ্গে। আর এ লড়াই যে খুব সহজ হবে না তা ত্রিপুরার ফল ঘোষণার পরই টের পাচ্ছে তৃণমূল। রাজ্যে নিজেদের অস্বিস্ত বাঁচাতে এখন তৃণমূলের ঘুম গেছে।

**বামদের ত্রিপুরায় বিজেপির জয়ধ্বনি, এগিয়ে নাগাল্যান্ডেও

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ৩ মার্চ, ২০১৮
ভিএস/ আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad