ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

ডিজিটাল ভারতের ডিজিটাল জাদুঘর

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
ডিজিটাল ভারতের ডিজিটাল জাদুঘর ছবি: আসিফ আজিজ-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ডিজিটাল ভারত গড়তে দেশেজুড়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে মোদী সরকার। এগিয়েও যাচ্ছে প্রযুক্তিতে। এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ মিললো দিল্লি ও গুজরাটের গান্ধী নগরের দুটি ডিজিটাল জাদুঘরে গিয়ে।

দিল্লি, গুজরাট ঘুরে: ডিজিটাল ভারত গড়তে দেশেজুড়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে মোদী সরকার। এগিয়েও যাচ্ছে প্রযুক্তিতে।

এর উৎকৃষ্ট প্রমাণ মিললো দিল্লি ও গুজরাটের গান্ধী নগরের দুটি ডিজিটাল জাদুঘরে গিয়ে। দুটি জাদুঘরই সাজানো ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে। থ্রি-ডি, ফোর-ডি, লেজার প্রজেকশন- কী নেই সেখানে! সত্যি জাদুঘরের ধারণা পাল্টে দেওয়া ডিজিটাল জাদুঘর।

এবছর বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টিমের ভারত সফরে যে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-রাজনীতি-অর্থনীতি-প্রযুক্তি জ্ঞান বিনিময়ের কথা বলা হয়েছিল, তার সমৃদ্ধ ধারণা মেলে জাদুঘর দুটি থেকে।

প্রবাসী ডিজিটাল গান্ধী জাদুঘরের একটি গ্যালারি১০০ তরুণকে সফরের চতুর্থ দিন সকালে নেওয়া হয় দিল্লির প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে। চারতলা ভবনটি উদ্বোধন হয়েছে চলতি বছরের ২ অক্টোবর গান্ধীর জন্মদিনে।

ভবনের তৃতীয় তলায় রয়েছে মহাত্মা গান্ধী প্রবাসী ডিজিটাল মিউজিয়াম। ভারতবাসীর কাছে এ ধরনের জাদুঘর একেবারেই নতুন। গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে এসে অগ্রসরমান প্রবল প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন নতুন প্রজন্মকে তাদের মতো করে গান্ধীকে চিনতে এ ব্যবস্থা।

প্রবাসী ডিজিটাল গান্ধী জাদুঘরের একটি গ্যালারিহালকা আলোয় ঘরজুড়ে শুধু গান্ধী আর গান্ধী। দেয়ালের গায়ে ছবি আর ভিডিও। উপরে ঝোলানো প্রজেক্টর। দেয়ালে সাঁটানো ছবি মনে হলেও আদতে এগুলো জীবন্ত! জীবন্ত মানে দেয়ালের ছবিতে বা ভিডিও সিম্বলে হাত ছোঁয়ালেই চলা শুরু হবে। জানা যাবে গান্ধীর প্রবাস জীবন ও দেশে ফেরার পর তার নানান কার্যক্রম।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের প্রথম প্রবাসী হিসেবে ২১ বছর ছিলেন গান্ধী। সেখানে থাকাকালীন তার আন্দোলন, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার, পড়াশোনা প্রভৃতি বিষয়ে নানা প্রশ্ন, ভিডিও রয়েছে এখানে। রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে এসে ভারত ভ্রমণের নানা ক্লিপস। সেই ভ্রমণ থেকে আন্দোলন, স্বাধীনতা পর্যন্ত গান্ধীর অবদান।

প্রবাসী ডিজিটাল গান্ধী জাদুঘরের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমজাদুঘরের একপাশে রয়েছে মাল্টিমিডিয়া সেন্টার। এখানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এসে গান্ধী সম্পর্কে পাঠ নেয়। তাদের ঘুরিয়ে দেখানো হয় পুরো জাদুঘর, গান্ধীর নানা কীর্তি।

জাদুঘরের ইনচার্জ বলেন, ভারত সরকার ডিজিটালি কীভাবে পরিবর্তন হচ্ছে তার উদাহরণ এ জাদুঘরটি। মোদীর স্বচ্ছ ভারত প্রোগ্রামের অংশ এটি। এখানে খুব সাধারণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। দেয়ালের স্ক্রিনে টাচ করলেই প্রশ্নের উত্তর কিংবা ভিডিও দেখা যাবে। ১৮৯৩ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত গান্ধীকে পাওয়া যাবে এখানে।

সফরের চিফ কো-অডিনেটর, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক ও তথ্য) রাজেশ উইকের আন্তরিকতায় বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন এ জাদুঘরটি।

গান্ধীনগরের ডান্ডি কুটিরশেষ এখানেই নয়, শেখার, জানার, দেখার বাকি ছিল আরও। এই ডিজিটাল প্রযুক্তি জ্ঞান আরও সমৃদ্ধ হলো গুজরাটের ‘গ্রিন সিটি’ রাজধানী শহর গান্ধীনগর গিয়ে। সফরের ৬ষ্ঠ দিন নেওয়া হয় ডান্ডি কুটির। ১৯৩০ সালে গান্ধীর লবণ অন্দোলন স্মরণে, লবণের স্তূপের আদলে তৈরি ৪১ মিটার উচ্চতার এ জাদুঘরটিকে দাবি করা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু জাদুঘর হিসেবে।

বাইরে থেকে এর স্থাপত্যকর্ম আকর্ষণীয় বটে। তবে ধারণা পরিবর্তন হলো ভিতরে ঢুকে। এটি আগেরটি থেকে আরও আধুনিক। সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো এ জাদুঘরে অন্য জাদুঘরের মতো কোনো কাচঢাকা গ্যালারি নেই। দর্শনার্থীদের কানে হেডফোন লাগিয়ে নেওয়া হয় এক ঘর থেকে আরেক ঘরে। ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে কানের হেডফোনে শুরু হয় ঘটনার বর্ণনা। সঙ্গে ভেসে ওঠে ছবি। বর্ণনা করা হয় ইংরেজি ও হিন্দিতে।

ডান্ডি কুটিরের ভিতরের একটি গ্যালারি।  ছবি: সংগৃহীতএ জাদুঘরে ব্যবহার করা হয়েছে আরও আধুনিক প্রযুক্তি। ফোর ডি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, লেজার লাইট শো, থ্রি-ডি হলোগ্রাফি ও ডিজিটাল এলইডির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে গান্ধীর শৈশব, কৈশোর, প্রবাস জীবন, অাফ্রিকায় নিগ্রহ, ফিরে এসে দেশভ্রমণ, জেল জীবন, সত্যাগ্রহ আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে মৃত্যুর মুহূর্ত পর্যন্ত।

কখনও এলইডি স্ক্রিনে, কখনও দেয়ালে লেজারের মাধ্যমে, কখনও সাধারণ ঘরটিকেই হঠাৎ গান্ধীর শৈশবের ঘর বানিয়ে ফেলা, কখনও ডামি তৈরি করে থ্রি-ডি, ফোর-ডি ডাইমেনশনের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা গান্ধীকে।

সোমবার বাদ দিয়ে কোনো দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢোকা যাবে এ জাদুঘরে। বিদেশিদের জন্য প্রবেশ ফি ২০০ রুপি।

আরও পড়ুন...
**গুজরাটের পর্যটনেও মোদী ম্যাজিক
** ইডেন গার্ডেনে গিয়ে যত আফসোস!

** সত্যি ‘গো দেওতা কা দেশ’!
**  তাজমহলে হয়ে যান ‘ডিপি’, করুন ‘সিপি’!
**গুজরাটে বসে কলকাতার থ্রিলার দর্শন
** সুর-বাদ্যে বাংলাদেশ-ভারতের সংস্কৃতি বিনিময়

 
 
 
 

 

** সমাধিসৌধে খচিত গান্ধীর ‘শেষ উক্তি’
** দিল্লি জামে মসজিদ থেকে লালকেল্লা
** সান্ধ্য আলোয় যুদ্ধস্মৃতির ইন্ডিয়া গেট
** জাদুটানা দিল্লি জাদুঘর
** বাংলা উচ্চারণেই মুগ্ধতা ছড়ালেন রাষ্ট্রপতি প্রণব
** বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রণব মুখার্জির
** হিমালয় দেখতে দেখতে সোয়া ২ ঘণ্টায় দিল্লি!
** ভারতে বাংলাদেশের ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম
** ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম  

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এএ/এমজেএফ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।