কলকাতা: অবৈধভাবে ভারতে এসেছিলেন বাংলাদেশি এক নারী। এরপর গুজরাটের ভাদোরায় বসবাস।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় শ্রমিক বিক্রম বাঘেলা নামে এক ভারতীয় প্রায় ১৫ বছর আগে রাজ্যের আমেদাবাদের চান্দোলায় কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন। সেখানেই পরিচয় হয় বাংলাদেশি ওই নারীর সঙ্গে। যিনি অবৈধভাবে ভারতে এসেছিলেন। তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বিক্রম। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু সেসময় তারা বিবাহ নিবন্ধন (রেজিস্ট্রি) করেননি। কয়েক বছর পর, স্ত্রীকে নিয়ে ভাদোরা জেলার পদরা এলাকার ভোজগ্রামে ফিরে আসেন বিক্রম। ওই দম্পতি জন্ম দেয় এক সন্তানের। সে সময় বিক্রম তার পরিবারকে জানায়নি যে, নারীটি বাংলাদেশি। বিক্রমের পরিবার-প্রতিবেশীরা জানতো তার স্ত্রী চান্দোলার বাসিন্দা।
কয়েকদিন আগে গুজরাটে অবৈধ বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় প্রশাসন। ভেঙে ফেলা হয় তাদের স্থাপনাগুলো। সেসময় নারীটির পরিচিত ৩০ জন বাংলাদেশি চান্দোলা থেকে পালিয়ে ভোজগ্রামে বিক্রমের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে গোপন তথ্য পেয়ে, ১ মে ভোজগ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। বিক্রমের স্ত্রীসহ সবাইকে আটক করা হয়। তখনই বিক্রমের শিশুটির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারে পুলিশ।
ভাদোরার জেলা পুলিশ সুপার (ডিএসপি-গ্রামীণ) রোহান আনন্দ জানান, ওই নারীকে অন্যদের মতো বাংলাদেশে ফিরে যেতে হবে।
আরেক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে শিশুটি বাবার কাছেই রয়েছে। তবে বিক্রমকে সন্তানের ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে। পাশাপাশি নারীটিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পর, ভারতে ফিরে আসতে হলে বৈধভাবে আসতে হবে। অর্থাৎ ভারতীয় ভিসার আবেদন করতে হবে। কিন্তু নারীটি, শিশুটিকে সাথে নিয়ে যেতে পারবেন না। কারণ শিশুটি বর্তমানে বাংলাদেশেরও নাগরিক নয়।
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর ভারতের একাধিক রাজ্যে অবৈধ বাংলাদেশি ধরতে অভিযান চালায় স্থানীয় প্রশাসন। গুজরাট পুলিশের দাবি, ইতোমধ্যেই প্রায় এক হাজার অবৈধ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। গুজরাটে ভেঙে ফেলা হয়েছে তাদের বসতি। কিন্তু, ভারতের একাধিক গণমাধ্যম দাবি করেছে, মোট ৪৫০ জনের মতো বাংলাদেশি আটক হয়েছে। আটক বাকিরা পশ্চিমবঙ্গের বাঙাালি। মূলত, বাংলা থেকে তারা কাজের সন্ধানে গুজরাটে গিয়েছিলেন। যদিও এ নিয়ে গুজরাট প্রশাসন কোনো বিবৃতি দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে কোলের সন্তানকে ফেলে দেশে ফিরে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশি নারীকে।
ভিএস/এমজেএফ