ঢাকা, রবিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

ফাইনালটা কলকাতা বা মুম্বাইয়ে হলে ভারত জিততো: মমতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
ফাইনালটা কলকাতা বা মুম্বাইয়ে হলে ভারত জিততো: মমতা

কলকাতা: ভারতের গুজরাটে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ক্রিকেট বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক চলছে। ফাইনালে ভারত হেরে যাওয়ার পর সেই বিতর্ক যেন আরও ফুলে ফেঁপে উঠেছে।

 

এমনকি ফাইনালে স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিত থাকা নিয়েও অনেকে টিপ্পনী কাটতে শুরু করেছেন।  

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সেই বিতর্ক আরও উসকে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় মমতা বলেন, ‘ফাইনালটা যদি কলকাতার ইডেনে বা মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড়ে হতো তাহলে ভারত জিততো। আমাদের ছেলেরা খেলাধুলায় যথেষ্ট পারদর্শী। কিন্তু তাদের গেরুয়া (বিজেপির পতাকার রং) পরিয়ে দিচ্ছে। প্লেয়াররা পরতে চায়নি। আপত্তি জানিয়েছিল। তারপরেও নীল জার্সির মধ্যে গেরুয়া লাগিয়ে দিয়েছে। ’

নাম উল্লেখ না করে কেন্দ্রের শাসক দলকে পাপিষ্ঠ বলেও সমালোচনা করেন তৃণমূলনেত্রী। মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন পাপ কখনও বাপকেও ছাড়ে না। ’

এরপরই তিনি বলেন, ‘এত ভীতু কখনও দেখিনি। একটা ফ্রন্ট করলাম। নাম দিলাম ইন্ডিয়া। আমাদের দেশের নামও ইন্ডিয়া। এরপর দেখি দেশের নাম ভারত করে দিয়েছে। আপনারা কি ‘কনস্টিটিউশন অফ ইন্ডিয়া’ (ভারতের সংবিধান) - এই শব্দটা কি চেঞ্জ করতে পারবেন?’ 

এরপরই নেত্রী তার বক্তব্যে দলীয় বিষয়ে প্রবেশ করেন। এর আগে বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষে, একই অভিযোগ তুলেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।  

তিনিও বলেছিলেন, খেলাটা কলকাতা বা মুম্বাইয়ে হলে ইন্ডিয়া জিততো। গুজরাটে হয়েই সর্বনাশ হয়ে গেছে।

মূলত, ক্রিকেট বিশ্বকাপের কোনো ফাইনাল ম্যাচকে নিয়ে এর আগে এত রাজনৈতিক সমালোচনা হয়নি। তাই শুধু মমতা নয়, সরব ভারতের জাতীয় কংগ্রেসও।  

মোদির নাম না করে রাহুল গান্ধীও বলেছিলেন, আমদাবাদ স্টেডিয়ামে নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি ভারতের জন্য শুভ ছিল না।  

টিপ্পনী কেটে তিনি বলেছিলেন, আমাদের ছেলেরা ভালোই খেলছিল। কিন্তু স্টেডিয়ামে এক ‘অপয়া’ বসেছিল। তার জন্যই ভারত হেরে গেল! রাহুলের এই টিপ্পনির তীব্র সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানিয়েছে বিজেপি।

বিরোধীদের অভিযোগ, বিশ্বকাপ নিয়ে বিজেপি অনেক দিন ধরে নকশা তৈরি করেছিল। প্রথমে আমেদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়াম সংস্কার করা এবং সেই স্টেডিয়াম  নরেন্দ্র মোদির নামে করা। তারপর বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ দুটো খেলা দেওয়া হয় সেই স্টেডিয়ামে। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। কিন্তু, ক্রিকেট বোর্ডের সচিবের পদে থেকে সেই কাজটা করিয়েছেন অমিত শাহর ছেলে জয় শাহ।

বিরোধীদের অভিমত, বিশ্বকাপ নিয়ে কেন্দ্রে শাসক দল পুরোদস্তুর রাজনীতি করতে চেয়েছিল। ভারত জিতলে, সেই ‘ফিল গুড ফ্যাক্টর’ জাতীয়তাবাদের মোড়ক লাগিয়ে, ভোটের আগে ব্যবহার করত। সম্ভবত সেই কারণেই ফাইনালে ভারতের পরাজয়ের পর বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। অনেকের মতে, ক্রিকেটে বিজেপির এই নাক গলানো বহু দেশ পছন্দ করছে না। তা বোধহয় আন্দাজ করতে পারছেন রাহুল-মমতা। আর সেই কারণে তারাও আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে সমালোচনার সুযোগ ছাড়ছেন না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।