ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ভারত

টাটাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ মমতার সরকারকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০২৩
টাটাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ মমতার সরকারকে

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা উচ্ছেদের মামলায় জোর ধাক্কা খেল মমতার সরকার। রাজ্যটির হাওড়া জেলার বহুচর্চিত সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার জেরে, টাটা মোটরস সংস্থাকে ৭৬৫ দশমিক ৭৮ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে।

প্রসঙ্গত, এই টাটার বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তাকেই গুনতে হবে এই টাকা।

৩০ অক্টোবর এই রায় দিল ভারতের তিন সদস্যের আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১১ শতাংশ হারে সুদও দিতে হবে। জানা গিয়েছে, ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যই এই রায়ের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের জয়ের পরই, তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, টাটার সঙ্গে রাজ্যটিতে একটি মোটরগাড়ি কারখানা তৈরির বিষয়ে কথা হয়েছে রাজ্য সরকারের।

এরপর, এই কারখানা তৈরির জন্য সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীকে প্রায় এক হাজার একর জমি দিয়েছিল বাম সরকার। পুরোটাই প্রায় ছিল তিন ফসলি কৃষিজমি। অর্থাৎ বছরে যেখানে তিনবার চাষ করা যায়। মূলত, সিঙ্গুরের মৌসুম ভিত্তিক সবজি চাষ বেশি হত।

রাজ্যটির সংখ্যালঘু কৃষকরা রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করে জমি দিতে নারাজ ছিলেন। মমতার নেতৃত্বে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কৃষকরা। টাটার ন্যনোর কারখানার কাজ অনেকদূর এগিয়ে গেলেও, ২০০৮ সালে তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়ে, পশ্চিমবঙ্গে কারখানা গড়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল টাটা গ্রুপ।

রাজ্য ক্ষমতায় আসার পর, মমতার সরকার টাটা মোটরসকে কারখানা গড়ার জন্য বিকল্প জমি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ততদিনে মোদির রাজ্য গুজরাটে চলে গিয়েছিল টাটার ন্যানো কারখানা।

তাই মমতার সরকারের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল টাটা। তারা জানিয়ে দিয়েছিল, বাম সরকারকে জমি অধিগ্রহণের জন্য তারা ১৫৪ কোটি রুপি দিয়েছিল। সেই সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করেছিল টাটা। ২০১৬ সালে, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণের সময় জমি অধিগ্রহণ আইনের বিধানগুলি মানেনি বাম সরকার। তাই ওই অধিগ্রহণকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছিল শীর্ষ আদালত। টাটা মোটরস পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেছিল, ভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে বলে কোনও সরকার একটি মামলার মাঝখানে তার অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে না।

আদালত জানিয়েছিল, অধিগ্রহণটি বেআইনি ছিল বলে, সরকার তার অবস্থান বদল করতে পারে। তখন টাটা রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বিষয়ে বিরোধ সমাধানে মধ্যস্থতাকারী প্যানেলের সহায়তা চেয়েছিল। এদিন, সেই প্যানেলই টাটাকে ৭৬৬ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ৩০ অক্টোবর, ২০২৩
ভিএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।